কাজিরবাজার ডেস্ক :
বাংলাদেশের নাগরিক অথচ বাবা-মা নেই বা পরিচয়-ঠিকানা নেই, এমন ব্যক্তিদের ভোটার করা নিয়ে জটিলতায় পড়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিশেষ করে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সরবরাহের ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ২০০৭ সালে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা কার্যক্রম শুরুর পর থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। কারও বাবা-মা না থাকলে ফরমে ‘পিতা/মাতা’ নেই বা নাম জানা নেই এমন কথা উল্লেখ করে ভোটার করে নেওয়া হতো। কিন্তু রোহিঙ্গারা সমতলে ছড়িয়ে যাওয়ার পর এই ধরনের ব্যক্তিদের ভোটার করা যাচ্ছে না। কেননা কমিশনের নির্দেশনা মোতাবেক এখন কেউ ভোটার হতে হলে বাবা-মার এনআইডি, স্থানীয় সরকার থেকে নাগরিকত্বের সনদ জমা নিতে হয়। কিন্তু যারা এতিমখানায় বড় হয়েছেন, পতিতালয়ে জন্ম বা পথশিশু ছিলেন, তাদের এই কাগজপত্র থাকে না। তাই তারা ভোটার হয়ে এনআইডি নিতে পারছেন না। এছাড়া নাগরিক সেবাও পাচ্ছেন না।
সম্প্রতি করোনা টিকা কর্মসূচিতে জন্মসনদ, এনআইডি, পাসপোর্ট না থাকায় এমন অনেকে সেবা নিতে পারেননি। বিষয়টি ইসির দৃষ্টিগোচর হওয়ায় করণীয় ভাবছে সংস্থাটি।
ইতোমধ্যে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, সরকারি দপ্তরের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনার বেগম কবিতা খানমের নেতৃত্বে একটি কমিটি এ নিয়ে কাজ করছে। বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে বহুপক্ষীয় আলোচনা ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে।
‘ভোটার তালিকায় পরিচয়হীনদের পিতা-মাতার নাম লিপিবদ্ধকরণ জটিলতা নিরসন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের স্পিকার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
এ বিষয়ে ইসির যুগ্ম সচিব মো. আবুল কাসেম বলেন, জটিলতা দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে। কর্মশালায় বিভিন্ন পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ হবে।
কর্মকর্তারা বলছেন, এমন ঘটনাও আছে যে বাবা-মা হিসেবে অন্যের নাম উল্লেখ করায় পরবর্তীতে সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে অপরাধে জড়িয়ে পড়লেও সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, আমরা বিভিন্ন জনের সঙ্গে আলোচনা করে পরিচয়হীনদের বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে সরকারের কাছে প্রস্তাব দেব।