প্লাস্টিক ব্যবহার তিন গুণ বেড়েছে

4

কাজিরবাজার ডেস্ক :
বাংলাদেশের শহর এলাকায় ১৫ বছরে মাথাপিছু তিন গুণ বেড়েছে প্লাস্টিকের ব্যবহার। ২০০৫ সালে মাথাপিছু প্লাস্টিকের ব্যবহার ৩ কেজি ছিল। কিন্তু ২০২০ সালে সে পরিমাণ ৩ গুণ বেড়ে ৯ কেজি হয়েছে। ঢাকা শহরে এই পরিমাণ ২২ কেজি ৫০০ গ্রাম, যা জাতীয় গড়ের চেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেশি। ২০০৫ সালে ঢাকায় মাথাপিছু প্লাস্টিকের ব্যবহার ছিল ৯ কেজি ২০০ গ্রাম। সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠানে ‘টুওয়ার্ডস এ মাল্টিসেক্টোরাল এ্যাকশন প্ল্যান ফর সাসটেইন্যাবল প্লাস্টিক ম্যানেজমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের পরিবেশ বিশেষজ্ঞ বুশরা নিশাত অনুষ্ঠানে বলেন, ইউরোপের দেশগুলোতে গড় মাথাপিছু প্লাস্টিকের ব্যবহার ১০০ কেজির বেশি, যেটি বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি। তবে বাংলাদেশ প্লাস্টিক দূষণের শিকার হওয়া দেশগুলোর তালিকার সবচেয়ে উপরে থাকা দেশগুলোর অন্যতম এবং প্লাস্টিক বর্জ্যের অব্যবস্থাপনাই এর জন্য দায়ী। এ বিষয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ড্যানড্যান চেন বলছেন, নগরায়নের ফলে বাংলাদেশে প্লাস্টিকের ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে। (অব্যবস্থাপনার) ফলে দূষণও তীব্রভাবে বাড়ছে। করোনা সঙ্কট প্লাস্টিক বর্জ্যের সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে এখন টেকসই প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনা জরুরী। একটি পণ্য ডিজাইন করা থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো, পুনর্ব্যবহার করা দেশের সবুজ প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ক্রমশ বাড়তে থাকা দূষণের হার কমিয়ে সবুজ প্রবৃদ্ধি নিশ্চিতের জন্য প্লাস্টিকের টেকসই ব্যবস্থাপনা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বাইরের শহরাঞ্চলে বার্ষিক মাথাপিছু প্লাস্টিক ব্যবহার ২০০৫ সালে ছিল তিন কেজি। ২০২০ সালে যা তিনগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে নয় কেজিতে। অন্যদিকে ঢাকার বাসিন্দারাই বছরে মাথাপিছু প্লাস্টিকের ব্যবহার করেন ২৪ কেজি, যা জাতীয় গড় থেকে উল্লেখযোগ্য হারে বেশি।
করোনা সঙ্কটের কারণে প্লাস্টিক দূষণ খারাপ অবস্থায় এসেছে। বিশেষ করে মাস্ক, গ্লাভস এবং ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জামাদিতে (পিপিই) প্লাস্টিকের ব্যবহার বেড়েছে। এসব প্লাস্টিক বর্জ্যরে একটি বড় অংশ জলাশয় ও নদীতে ফেলা হয়। যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, টেকসই প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশের জাতীয় কর্মপরিকল্পনায় ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ২০৩০ সালের মধ্যে প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন ৩০ শতাংশ কমানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন বলেন, প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে আনতে সরকার কাজ করছে। সবাই সচেতন হলে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।