মজুদদার : আইনী ও ইসলামী দৃষ্টিকোণ

17

॥ মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান ॥

(পূর্ব প্রকাশের পর)
মজুদদারির মেয়াদ : কৃত্রিম সংকট তৈরী করে বেশি মুনাফা অর্জন করা বা দুর্ভিক্ষের অপেক্ষায় থেকে পণ্য চড়া মূল্যে বিক্রি করার উদ্দেশ্যে পণ্য সামগ্রী মজুদ রাখা একেবারেই নিষিদ্ধ। কিন্তু স্বাভাবিক অবস্থায় অল্প দিনের জন্য মজুদ করা হলে তাতে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে না। আর যদি বেশি দিন মজুদ করে রাখা হয় তাহলে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। কোন কোন আলিমের মতে, সর্বোচ্চ মেয়াদ হবে চল্লিশ দিন। কেননা রাসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি চল্লিশ রাত্র খাদ্যশষ্য মজুদ করে রাখল, সে আল্লাহ থেকে সম্পর্কহীন হয়ে গেল এবং আল্লাহও তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলেন”। “ইমাম আহমদ, আল-মুসনাদ, প্রাগুক্ত, পৃ. ৪৩৭” আবার কেউ বলেছেন, এক মাস। কেননা এক মাসের নিচে হলে তা কম হিসেবে ধরা হয়। আর এক মাসের বেশি হলে তা সর্বোচ্চ হিসেবে গণ্য হয়। কিন্তু চল্লিশ দিনের অধিক রাখলে দুনিয়াতে তাকে শাস্তি দিতে হবে। মোটকথা শরীয়তের দৃষ্টিতে খাদ্য সামগ্রী ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আটক রাখা সমীচীন নয়। “বুরহানুদ্দীন আল-মারগিনানী, আল-হিদায়া, প্রাগুক্ত, পৃ. ৪৫৫”
নিজের জমির উৎপাদিত ফসল মজুদ করে রাখা যাবে। “ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, রাদ্দুল মুহতার, প্রাগুক্ত, পৃ. ৫৭২” অনুরূপভাবে পরিবারের বাৎসরিক ব্যয়ভার বহনের প্রয়োজনীয় পরিমাণ পণ্য মজুদ রাখা যাবে। কেননা উমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (স.) বনী নযীরের খেজুর গাছ বিক্রি করে দিয়েছিলেন এবং তাদের এক বছরের খাদ্য সামগ্রী তার পরিবারের জন্য মজুদ করে রেখে দিয়েছিলেন”। “ইমাম বুখারী, সহীহ আল-বুখারী, অধ্যায়: আন-নাফাকাত, অনুচ্ছেদ: হাবসুর রাজুলি কুতা সানাতিন আলা আহলিহি ওয়া কায়ফা নাফাকাতুল ইয়াল, প্রাগুক্ত, পৃ. ৪৬২”
মানুষ ও চতুষ্পদ জন্তুর খাদ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছাড়া অন্য জিনিসপত্র যা মৌলিক প্রয়োজনে পড়ে না, তা মজুদ করা যাবে।
নিজ শহর থেকে নয় বরং দূরবর্তী শহর- যেখান থেকে সাধারণত সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আসে না, সেখান থেকে আমদানী করে মজুদ করে রাখা যাবে। “মুফতী মাওলানা মানসূরুল হক, ফাতাওয়ায়ে রাহমানিয়া, প্রাগুক্ত, পৃ. ১৬৭”
ভবিষ্যতের সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ এড়াতে অথবা অতিরিক্ত মৌসুমী উৎপাদন অন্য মৌসুমে সহজলভ্য করার উদ্দেশ্যে সরকার প্রয়োজনীয় পরিমাণ পণ্য সামগ্রী মজুদ করতে পারবে।
তবে যে কোন অবস্থায় যদি মানুষ বা পশুর প্রয়োজনে মজুদকৃত পণ্য বিক্রির প্রয়োজন দেখা দেয় তাহলে পণ্য সামগ্রী আটকে না রেখে প্রয়োজন ও মানবিক দিক বিবেচনা করে সুলভ মূল্যে বিক্রি করে দেয়া কর্তব্য।
ইসলামী আইনে বাজারমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ : বাজার ও দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক গতিতে চলুক এটাই ইসলামের দাবি। স্বাভাবিক অবস্থায় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা বা মূল্য নির্ধারণ করার ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার অধিকার সরকারের নেই এবং প্রয়োজনও নেই। বাজারে পণ্য সামগ্রীর আমদানী ও তার চাহিদার আলোকে দ্রব্যমূল্যের উত্থান-পতন হতে থাকে। এ ক্ষেত্রে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে সরকার দ্রব্যমূল্যে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। “ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, রাদ্দুল মুহতার, প্রাগুক্ত, পৃ. ৫৭৩; বুরহানুদ্দীন আল-মারগিনানী, আল-হিদায়া, প্রাগুক্ত, পৃ. ৪৫৫” ক্রেতা ও বিক্রেতার পারস্পরিক চাহিদার ভিত্তিতেই পণ্য দ্রব্যের মূল্য নির্ধারিত হবে।
রাসূলুল্লাহ (স.) দ্রব্যমূল্য নির্ধারণ থেকে বিরত থেকেছেন। তাঁর আমলে একবার দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেলে লোকেরা এসে বলল, “হে আল্লাহর রসূল! আমাদের জন্য দ্রব্যমূল্য নির্ধারণ করে দিন। তখন নবী স. বললেন, “প্রকৃতপক্ষে দ্রব্যমূল্য নির্ধারণকারী হচ্ছেন স্বয়ং আল্লাহ। তিনিই মূল্য বৃদ্ধি করেন। তিনিই সন্তা করেন। রিযিকদাতা তিনিই। আমি তো আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করতে চাই এ অবস্থায় যে, কোন রূপ জুলুম, রক্তপাত বা ধন-মালের অপহরণ ইত্যাদির দিক দিয়ে আমার কাছে দাবিদার কেউ থাকবে না”। “ইমাম তিরমিযী, জামে আত-তিরামিযী, অধ্যায়: আল-বুয়ু, অনুচ্ছেদ: মা জাআ ফিত তাসয়ীর, আল-কুতুবুস সিত্তাহ, রিয়াদ: দারুল সালাম, ২০০০, পৃ. ১৭৮৩-৮৪”। সাহাবাদের দাবির প্রেক্ষিতে রসূলুল্লাহ স. দ্রব্যমূল্য নির্ধারণে হস্তক্ষেপ করেননি। কেননা দ্রব্যমূল্য নির্ধারণের অধিকারী হচ্ছে ক্রেতা ও বিক্রেতা। দ্রব্যমূল্য নির্ধারণ করতে গেলে তাদের অধিকারে হস্তক্ষেপ হবে, যা কোন মতেই সমীচীন নয়। বরং তা আরো জুলুমের শামিল।
তবে ব্যবসায়ীরা যদি স্বেচ্ছাচারী হয়ে মাত্রাতিরিক্ত চড়া মূল্যে পণ্য বিক্রি করে ভোক্তাসাধারণের দুঃখ-দুর্দশা ও দুর্ভোগ সৃষ্টি করে তাহলে জনগণকে মূল্য বৃদ্ধির শোষণ থেকে মুক্ত করতে এবং তাদের ন্যায্য অধিকার সংরক্ষণ করতে সরকার বিশেষজ্ঞ কমিটির পরামর্শক্রমে দ্রব্যমূল্য নির্ধারণ করে দিবে এবং ব্যবসায়ীদেরকে তা মানতে বাধ্য করবে।“ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, রদ্দুল মুহতার, প্রাগুক্ত, পৃ. ৫৭৩; বুরহানুদ্দীন আল-মারগিনানী, আল-হিদায়া, প্রাগুক্ত, পৃ. ৪৫৬”
আল্লামা ইউসুফ আল-কারযাভী বলেন, ‘গণঅসন্তোষ সত্ত্বেও অন্যায়ভাবে যদি কোন হালাল বস্তুর উচ্চ মূল্য চাপিয়ে দেয়া হয়, তবে তাও হবে হারাম। পক্ষান্তরে লোকদের মধ্যে সুবিচার ও ইনসাফ কার্যকর করার উদ্দেশ্যে যদি মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হয় এবং প্রচলিত দামে (Standard Price)  বিক্রয় করতে ব্যবসায়ীদেরকে বাধ্য করা হয় কিংবা প্রচলিত বিনিময় মূল্যের অধিক গ্রহণ থেকে তাদের বিরত রাখা হয় তাহলে তা শুধু জায়েযই নয়, ওয়াজিবও।” “আল্লামা ইউসুফ আল-কারযাভী, অনু: মওলানা মুহাম্মদ আবদুর রহীম, ইসলামে হালাল হারামের বিধান, প্রাগুক্ত, পৃ. ৩৫৩-৫৪”
বাংলাদেশে মজুদদারি ও মূল্যবৃদ্ধির চিত্র : নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী সহজলভ্য ও ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখা সরকারের দায়িত্ব এবং ভোক্তা শ্রেণীর অধিকার। কিন্তু আমাদের দেশের বাজার ব্যবস্থাপনা মজুদদার লুটেরাদের হাতে কুক্ষিগত। অতি মুনাফাখোর অসাধু একদল ব্যবসায়ীর যাতাকলে আজ সাধারণ মানুষ নিষ্পেষিত। অসাধু ব্যবসায়ী শ্রেণি সিন্ডিকেট করে পণ্য গুদামজাত করে রাখে এবং কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে পণ্যের মূল্য নিজেদের ইচ্ছাকৃত নির্ধারণ করে। পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ ও বাজার তদারকির জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষ রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা ভোক্তা সাধারণ যথেষ্ট মনে করেন না। কখনো অতি মুনাফাখোর ব্যবসায়ী শ্রেণির সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীর যোগসাজশ থাকার কথাও গণমাধ্যমে প্রকাশ হতে দেখা যায়। কর্তৃপক্ষের এই দুর্বলতার সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে দফায় দফায় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করে। ফলে বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। আর ক্রেতা সাধারণ আকাশ ছোঁয়া দ্রব্যমূল্যের কারণে হয়ে পড়ে দিশেহারা। বিশেষত রমযান ও ধর্মীয় উৎসবগুলোতে বাজার ব্যবস্থাপনায় শোচনীয় অবস্থা বিরাজ করে। তখন কিছু সংখ্যক ব্যবসায়ী নিত্য প্রয়োজনীয় সকল পণ্য মজুদ করে রাখে। এতে অস্বাভাবিকভাবে পণ্যের মূল্য হু হু করে বাড়তে থাকে। ভোক্তা শ্রেণি প্রয়োজনের তাগিতে চড়ামূল্যে পণ্য সামগ্রী ক্রয় করতে বাধ্য হয়। ফলে এ সুযোগে অতি মুনাফাখোর একদল অসাধু ব্যবসায়ী সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলে। আর সাধারণ মানুষ চড়া মূল্যে পণ্য ক্রয় করে নিঃস্ব থেকে আরো নিঃস্বতর হয়। এ সমস্যা নিয়ে প্রিন্ট মিডিয়ায় অনেক লেখালেখি হয় এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বহু সচিত্র প্রতিবেদন ও প্রচার হয়। বিভিন্ন সময়ে সেমিনার-সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করা হয়। সেমিনারে এ সমস্যা নিরসনে বিস্তারিত আলোচনা করা হয় এবং সুপারিশমালা গ্রহণ করা হয়। তখন সরকারি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মজুদদারি ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণের নানা কথা বলে থাকেন এবং ব্যবসায়ীরা বহু প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকেন। কিন্তু বাস্তবে এ সমস্যার প্রতিকার সামান্যই পরিলক্ষিত হয়।
মজুদদারির ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যে অস্থিতিশীল ও অরাজকতাপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হয়, তা অর্থব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়। আর সামাজিক কর্মকাণ্ডে যে নৈরাজ্যকর ও বিশৃংখল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, তা সমাজ ব্যবস্থাকে পর্যুদস্ত করে ফেলে। ইসলাম এ ক্ষেত্রে শাশ্বত ও যুগোপযোগী বিধান দিয়েছে। মজুদদারিকে নিষিদ্ধ করেছে এবং এ অবস্থা নিরসনে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ ছাড়াও এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আরো কিছু পদক্ষেপ রাষ্ট্রীয়ভাবে গ্রহণ করা যেতে পারে। যেমন: সরকার মজুদদারির কুপ্রভাব সর্বসাধারণের সামলে তুলে ধরবে। এ ক্ষেত্রে ইসলামী বিধি-নিষেধগুলো প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। মজুদদারদেরকে শরয়ী নির্দেশনা পালনে পদক্ষেপ নিবে এবং ভোক্তাদের অধিকার আদায়ে সচেষ্ট থাকবে। দেশে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিলে সরকার মজুদদারদেরকে নীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে মজুদকৃত পণ্য সুলভ মূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য করবে। মুজদদার শ্রেণি যদি তা অস্বীকার করে, তাহলে জনসাধারণের দু:খ-দুর্দশা লাঘবে এবং তাদের স্বার্থ ন্যায়সঙ্গতভাবে রক্ষার উদ্দেশ্যে সরকার মজুদকৃত পণ্য সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করে তা ন্যায্য মূল্যে বিক্রির ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সরকার নিত্য প্রয়োজনীয় সে সকল পণ্য সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে যা মজুদদারির কারণে দু¯প্রাপ্য এবং দেশের অভ্যন্তরে সব পণ্যের উৎপাদন বাড়ানোর প্রচেষ্টা চালাবে। সরকার অন্যান্য দেশের সাথে পণ্য বিনিময় করবে বা তাদেরকে ব্যবসায়ের জন্য উদ্বুদ্ধ করবে। বিশেষত দু¯প্রাপ্য পণ্য সামগ্রী বাণিজ্যিকীকরণে তাদের উৎসাহিত করবে এবং পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা প্রদান করবে। যদি মুজদদারির কারণে পণ্য সামগ্রীর মূল্য বেড়ে যায় এবং বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে, তাহলে সরকার ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষার্থে বিশেষজ্ঞ কমিটির পরামর্শক্রমে দ্রব্যমূল্য নির্ধারণ করে দিবে। আর মজুদদার শ্রেণিকে পণ্য ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য করবে। কিন্তু বাজার যখন স্থিতিশীল হয়ে যাবে তখন ক্রেতা-বিক্রেতাকে স্বাধীনতা দেয়া হবে, যাতে তাদের চাহিদার আলোকে পণ্য মূল্য নির্ধারিত হয়। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি মনিটরিং সেল গঠন করবে। মনিটরিং সেলের অধীনে নিজস্ব জনবল দিয়ে প্রতিনিয়ত বাজার পরিদর্শনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। যদি পরিদর্শকদলের নিকট কোন অনিয়ম পরিলক্ষিত হয় তাহলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
খাদ্য নিজস্ব উদ্যোগে আমদানীর জন্য সরকার একটি বোর্ড গঠন করতে পারে। এ বোর্ডের মাধ্যমে পণ্য আমদানী করবে বা যারা পণ্য আমদানী করবে এ বোর্ড তাদের মনিটরিং করবে। এতে আমদানীকারকরা বেশি মূল্যে পণ্য বিক্রির সুযোগ নিতে পারবে না।
এ সকল পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে নৈরাজ্যকর ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে একটি সুন্দর পরিবেশ বিরাজ করবে এবং ক্রেতা-বিক্রেতার অধিকার সুনিশ্চিত হবে।
উপসংহার : ইসলাম মানব জাতির কল্যাণ নিশ্চিত করার লক্ষে জীবনের সর্বক্ষেত্রে ইসলাম যুগোপযোগী বিধান দিয়েছে। ব্যবসায়-বাণিজ্যের মত অতীব গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ডেও কল্যাণকর নীতি-আদর্শ উপহার দিয়েছে। এ নীতির অন্যতম দিক হলো- মজুদদারি, মুনাফাখোরী, কালোবাজারী ও যে কোন প্রতারণামূলক ব্যবসায়-বাণিজ্যের নিষিদ্ধকরণ। ইসলাম অতি মুনাফার লোভে প্রতারণা করে ও অপকৌশল অবলম্বন করে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী আটক রাখাকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। আধুনিক কালেও যেখানে পৃথিবীর নানা স্থানে মজুদদারির প্রভাবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনসাধারণ বিপর্যপ্ত, সেখানে ইসলাম বহুকাল পূর্বেই এর আইনগত বিধান বর্ণনা করে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের অধিকার নিশ্চিত করেছে। পরিশেষে আমরা বলতে পারি, ইসলাম নির্দেশিত পন্থায় যদি ব্যবস্থায়-বাণিজ্য সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা হয় তাহলে শুধু মজুদদারির অপতৎপরতাই নয় ব্যবসায়-বাণিজ্যে কোন ধরণের নৈরাজ্য থাকবে না। (সমাপ্ত)