সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ॥ বিশ্বনাথে স্বজনদের বিরুদ্ধে সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগ প্রবাসীর

4

স্টাফ রিপোর্টার :
নিজ মামা ও মামাতো ভাইদের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছেন এক যুক্তরাজ্য প্রবাসী। দেখাশোনার দায়িত্ব দিলে মামা ও মামাতো ভাইরা মিলে তার সম্পত্তি জবর দখলের ষড়যন্ত্র করছেন বলেও অভিযোগ করেন বিশ্বনাথের কাউপুর গ্রামের মৃত আমিন উদ্দিনের ছেলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী আশিক উদ্দিন। সোমবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এসব অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, যুক্তরাজ্য যাওয়ার আগে তাদের উত্তরাধীকারী ও ক্রয়সূত্রে প্রাপ্ত সমস্ত সম্পত্তি দেখাশোনার জন্য মামা একই গ্রামের মৃত করিম বকসের ছেলে আরশ আলী (৬০), মামাতো ভাই নজরুল ইসলাম নিজাম (৩৮) ও গিয়াস উদ্দিন (৩১)কে দায়িত্ব দিয়ে যান। এর পর থেকে কৃষিজমি, মৎস্যসহ বিভিন্ন খাত থেকে আয় হওয়া টাকা তারা যুক্তরাজ্যে তার কাছে পাঠাতেন। কিন্তু গত ছয় বছর থেকে তার মামা ও মামাতো ভাইয়েরা টাকা পাঠানো বন্ধ করে দেন। তাদেরসঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা নান অজুহাত দেখাতে শুরু করেন বলেও অভিযোগ করেন এ প্রবাসী।
এর পর থেকে আশিক উদ্দিনের মামা ও মামাতো ভাইয়েরা তাদের সমস্ত সম্পত্তি আত্মসাতের ষড়যন্ত্র করছেন উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, অভিযুক্তরা আমার কৃষিজমির ফসল ও বাড়ি নির্মাণের জন্য রক্ষিত ইট, পাথর, বালু বিক্রি করে প্রায় ২৩ লাখ টাকা আত্মসাত করে। এ খবর পেয়ে আমি ২০১৯ সালে দেশে ফিরে আসি এবং নিজ বাড়িতে অবস্থান করি। কিন্তু দেশে আসার কিছুদিন পর ওই বছরের ৮ ডিসেম্বর সদলবলে আমার বাড়ি দখল করতে আসে। পরে আমার চিৎকারে লোকজন চলে আসলে ওই চক্র পালিয়ে যায়। এ সময় আমার সম্পত্তি দখল করে নিবে বলে হুমকী দেওয়া হয়। এই ঘটনায় আমি ভীতসন্ত্রস্থ হয়ে পড়ি এবং সম্পত্তি রক্ষায় মুরব্বীদের পরামর্শক্রমে ঘটনার ৯ দিন পর সিলেটের মাননীয় অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করি। মামলা দায়েরের পরদিনও অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে ফের লাঠি-সোটাসহ বাড়িতে এসে আমাকে জিম্মি করে বাড়ি দখলে রাখে। পরে গস্খামবাসী এসে আমাকে উদ্ধার করেন।
এ বিষয়ে গ্রামের মুরব্বিরা সালিশ আহ্বান করলেও অভিযুক্তরা তাতে সাড়া না দিয়ে সালিশ কার্যক্রম এড়িয়ে চলতে থাকেন বলেও বলেন তিনি।
তিনি বলেন, সালিশ অমান্য করে আমার সম্পত্তি ফেরত পেতে তারা ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। বিষয়টি সালিশে জানাজানির ঘটনায় অভিযুক্তরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং মামলা দায়েরের পরদিন মামাতো ভাই নিজাম উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল লাঠিয়ালবাহিনীসহ ফের বসতঘরে প্রবেশ করে আমাকে জোরপূর্বক বের করে দিয়ে বাড়িটি নিজেদের দখলে রাখে। এ বিষয়ে বিশ্বনাথ থানায় করা একটি মামলা আদালতে বিচারাধীন আছে।
অভিযুক্তরা দুষ্কৃতিকারী এবং চিহ্নিত সন্ত্রাসী উল্ল্যেখ করে তিনি বলেন, তাদেও বিরুদ্ধে জায়গা বিক্রি ও দখলের, ঘর জ¦ালানিসহ তাদের বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
তিনি বলেন, এই চক্র ক্ষিপ্ত হয়ে আমার দায়েরকৃত মামলার সাক্ষীদের বিরুদ্ধে মারধর, মাছ চুরি, ধান জ¦ালানো, জায়গা আত্মসাতসহ একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। শুধু তাই নয় এক মহিলাকে বাদি বানিয়ে কাল্পনিক তথ্য দিয়ে আমার মামলার সাক্ষীগণদের বিরুদ্ধে দক্ষিণ সুরমা থানায় মামলা দায়ের করে হয়রানি করছে তারা। শুধু মামলা দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি তারা। এশর পর এক হামলা করে আমার সাক্ষিদের জিম্মি করারও চেষ্টা করছে তারা। এবং প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি প্রদান করা হয়েছে। এই ঘটনায় চলতি বছরের ১৬ নভেম্বর জেলা পুলিশ সুপার বরাবরে ওই চক্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছি।
থানা পুলিশও আসামী চক্রের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে প্রভাবিত হচ্ছে জানেিয় তিনি বলেন, আমরা যারা নিজের ভিটে মাঠি ছেড়ে নানা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাসে দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছি, দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখছি, তাদের নিরাপত্তায় যেখানে থানা পুলিশ সহযোগিতা করার কথা, সেখানেও আমরা ভরসা পাচ্ছি না।
এ সময় তিনি তার সম্পত্তি ও জীবন-জীবীকা রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।