স্পোর্টস ডেস্ক :
শেষ ওভার পর্যন্ত স্কটল্যান্ডের জয় পাওয়ার সম্ভাবনা টিকে ছিল। শেষ দুই ওভারে দরকার ছিল ৩৯। যেটা শেষ ওভারে দাঁড়ায় ২৬। কঠিন হলেও অসম্ভব ছিল না।
তবে নিউজিল্যান্ডের অভিজ্ঞতার সঙ্গে পেরে উঠলো না স্কটিশরা। শেষ দুই ওভারে দারুণ বোলিংয়ে স্কটিশদের আশা ভরসা শেষ করেছেন সাউদি-মিলনে। দুবাইয়ে সুপার টুয়েলভের লড়াইয়ে ১৬ রানের স্বস্তির জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে নিউজিল্যান্ড।
লক্ষ্য ছিল ১৭৩ রানের। রান তাড়ায় সাহসী সূচনা করে স্কটল্যান্ড। অধিনায়ক কাইল কোয়েতজার শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন। তবে তার ইনিংসটি ১১ বলে ১৭ রানের বেশি এগোয়নি। ট্রেন্ট বোল্টের স্লোয়ারে মিডঅনে টিম সাউদির হাতে ক্যাচ তুলে দেন স্কটিশ অধিনায়ক।
তৃতীয় ওভারে উইকেট হারানোর পর পরের দুই ওভারে মাত্র ৩ রান নিতে পারে স্কটল্যান্ড। সেই চাপ কাটাতে ষষ্ঠ ওভারে অ্যাডাম মিলনেকে টানা পাঁচটি বাউন্ডারি হাঁকান ম্যাথিউ ক্রস।
তবে দুই ওভার পর জর্জ মুনসেকে (১৮ বলে ২২) তুলে নেন ইশ সোধি। ১০ ওভারে ২ উইকেটে ৭৬ রান তোলে স্কটল্যান্ড। ১১তম ওভারে আরও একটি উইকেট হারায় দলটি।
১২ বলে ২১ রানে পৌঁছে যাওয়া ক্রস হঠাৎ খোলসে ঢুকে পড়েছিলেন। ২৯ বলে ২৭ করে তার ইনিংসটির ইতি ঘটে সাউদির বলে বোল্ড হয়ে।
এরপর রিচি বেরিংটন আর কলাম ম্যাকলিয়ড ২৪ বলে ২৬ রানের একটি জুটি গড়েন। ৬ বলের ব্যবধানে তারা দুজন ফিরে গেলে ফের চাপে পড়ে স্কটল্যান্ড। ধীরগতির ম্যাকলিয়ডকে (১৫ বলে ১২) তুলে নেন বোল্ট।
১৬তম ওভারে মারমুখী বেরিংটন (১৭ বলে ২০) ইশ সোধিকে বড় শট খেলতে গিয়ে বল সোজা ওপরে তুলে দেন। উইকেটরক্ষক কনওয়ে নেন সহজ ক্যাচ।
শেষ তিন ওভারে ৫৬ রান দরকার পড়ে স্কটল্যান্ডের। মাইকেল লিস্ক সোধির করা ইনিংসের ১৮তম ওভারে দুই বাউন্ডারি আর এক ছক্কা হাঁকিয়ে সুযোগ তৈরি করেন।
পরের ওভারে সাউদি দারুণ বোলিং করেন। প্রথম পাঁচ বলে দুটি ওয়াইড দিলেও খরচ করেন মাত্র ৭ রান। পঞ্চম বলে লিস্ক ছক্কা হাঁকান। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে।
শেষ ওভারে ২৬ লাগে স্কটল্যান্ডের। অ্যাডাম মিলনের ওভারে ৯ রানের বেশি তুলতে পারেনি স্কটিশরা। মাইকেল লিস্ক ২০ বলে ৪২ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে মাত্র ৭ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করে মার্টিন গাপটিল। তবে তার ৫৬ বলে ৯৩ রানের ঝকঝকে ইনিংসে ভর করেই ৫ উইকেটে ১৭২ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি দাঁড় করায় নিউজিল্যান্ড।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই ছিল কিউইদের। দুই ওপেনার মার্টিন গাপটিল আর ড্যারেল মিচেল ২৫ বলে গড়েন ৩৫ রানের জুটি।
পঞ্চম ওভারে এসে জোড়া আঘাত হানেন সাফইয়ান শরিফ। স্কটিশ পেসার পাঁচ বলের মধ্যে তুলে নেন মিচেল আর অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে।
১১ বলে ১৩ করে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হন মিচেল, লেগ সাইডে বেরিয়ে যাওয়া বল গ্ল্যান্স করতে গিয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে ধরা পড়েন উইলিয়ামসন (০)।
পাওয়ার প্লে’র ঠিক পরেই আরেকটি উইকেট হারিয়ে বসে কিউইরা। এবার রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক ক্রসের আরেকটি ক্যাচ ডেভন কনওয়ে (১)। ৫২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে নিউজিল্যান্ড।
তবে গ্লেন ফিলিপসকে নিয়ে সেই চাপ দারুণভাবে কাটিয়ে উঠেন মার্টিন গাপটিল। উইকেটে সেট হয়েই চালিয়ে খেলতে শুরু করেন কিউই ওপেনার, ফিলিপস কেবল সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিলেন।
শেষ পর্যন্ত তাদের ৭২ বলে ১০৫ রানের ঝড়ো জুটিটি ভাঙে ফিলিপসের আউটে। ধীরগতির ব্যাটিং করে (৩৭ বলে ৩৩) ফিলিপস ডিপমিডউইকেটে ব্র্যাড হোয়েলকে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ হন।
গাপটিলের সুযোগ ছিল সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার। কিন্তু সেই সুযোগ আর দেননি হোয়েল। পরের বলেই মারকুটে এই ওপেনারকেও হতাশায় ডোবান স্কটিশ পেসার। ৫৬ বলে ৯৩ রান করে লংঅনে ধরা পড়েন গাপটিল, যে ইনিংসে চারের চেয়ে ছক্কাই ছিল বেশি (৬ বাউন্ডারির সঙ্গে ৭ ছক্কা)।
স্কটিশ বোলারদের মধ্যে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন সাফইয়ান শরিফ আর ব্র্যাড হোয়েল।