স্টাফ রিপোর্টার :
এক যুগ ধরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমি দখল করে নিয়েছে ভূমিখেকোরা, এমন অভিযোগ করেছেন এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোনো আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় পর্যায়ক্রমে একর পর এক অপরাধ করে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ বীর মুক্তিযোদ্ধা আম্বর আলীর মেয়ে কুলছুমা বেগমের। গতকাল বুধবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে কুলছুমা বেগম বলেন, আমার বাবা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে সাহাদত বরণ করেন। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হয়েও নিজের সম্পত্তি ভূমিখেকোদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারছি না। দ্বাওে দ্বাওে ঘুরেও কোনো সুবিচার পাচ্ছি না। উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ভূমির বাটোয়ারার জন্য ২০০৭ সালে মামলা করি। আদালত গত ২০০৯ সালের ১২ মার্চ ওই ভূমিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। কিন্তু মৃত আয়াত উল্লার ছেলে ভূমিখেকো জসিক ও আরব গংরা আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ওই বছরের ১৯ জুন ওই জমিতে পাকা দেয়াল নির্মাণ করে কিছু অংশ দখল করে নেয়। আমরা ১৩ জুলাই ফের ভায়েলেশন মামলা করি। দীর্ঘ ১২ বছর ধরে ওই জমি প্রতিপক্ষ দখল করে নিলেও আদালতের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় একের পর এক অপরাধ করে যাচ্ছে তারা।
তিনি আরও বলেন, ওই ভূমি দখল করেই থেমে থাকেনি জসিক গং। ২০০৯ সালের ২২ জুন আমার স্বত্ব দখলিয় ২ শতক জমির উপর রাস্তা নির্মাণ করে তার নিচ দিয়ে গ্যাসলাইন নিয়ে যায়। এছাড়া ২০২০ সালে ১৬-২১ সেপ্টেম্বর নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও ৯ শতক জমির উপর নির্মিত পরনো দোকান ঘর ভেঙ্গে নতুন দোকান ঘর ও আবাসিক ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করে। এ বিষয়ে পুলিশকে অবগত করলে পুলিশ এসে নিষেধাজ্ঞার কথা বললে তারা চলে যায়। ওই সময় পুলশ আমাদের জানায় কারও বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট না থাকলে তারা কাওকে গ্রেফতার করতে পারবে না। অথচ এর আগেও ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসের বিভিন্ন তারিখে তারা আমার প্রায় ১৫-১৬ লাখ টাকার ছোট-বড় অসংখ্য গাছ কেটে নিয়ে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে শারীরিক নির্যতনেরও অভিযোগ করেন কুলছুমা বেগম। তিনি বলেন, আমর বসত ঘরের দেয়াল ও জানালা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে ঘওে থাকা নারীদের মারধর করে এবং আমাদেরকে ঘর থেকে বের করে দেয় জসিক গং এবং ইট, বালু ফেলে রাস্তাটি নতুন করে দখল করে নেয়। নিষেধাজ্ঞার কথা বললে তারা আমাদের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানালে তারা সরে যায়। পুলিশ যাওয়ার পর তারা আবারও রাস্তা নির্মাণ করে। ইংজাশন ও ভায়েলেশন মামলা থাকার পরও আদালতের অনুমতি ছাড়াই তারা এভাবেই আমার জমি দখল করে নেয়।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আদালত, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র বরাবরে আবেদন করেও কোনো সুবিচার পাননি বলেও জানান। তিনি বলেন, সর্বশেষ আমার মেয়েকে রড দিয়ে মেরে মারাত্মক আহত করলে ২০২০ সালের ২২ নভেম্বর নারী নির্যাতন মামল করি। ওই মামলার আসামীরা হলো সিলেটের ঘাসিটুলা এলাকার মৃত হায়াত উল্লাহর ছেলে জসিক, আরব, মৃত আমিন উল্লাহর ছেলে শরিফ, সুমন, মৃত রেহান উল্লাহর ছেলে আনোয়ার, নুরুল, নূরুলের ছেলে সাদেক, সাহেদ, মুন্না, মুহিব, মৃত সাজু মিয়ার ছেলে সিজান এবং জসিকের ছেলে রহমত। তারপরও আমি কোনো সুবিচার পাইনি। আমার আইনজীবী এ বিষয়ে আপোষে নিস্পতির কথা জসিক গংদের জানালেও তারা এতে কোনো কর্ণপাত করেনি। উল্টো আমাকে হুমকি দামকি দিয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে তিনি আদালত, থানা পুলিশ, মেয়র ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সহযোগিতা কামনা করেন।