বড়লেখা থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন আলম (৩৮) হত্যা মামলার প্রধান আসামি কাজল মিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সোমবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহরিয়ার কবিরের আদেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী খন্দকার সাইফুর রহমান রানা ও আইনজীবী ইমরান আহমদ।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সকালে ইউপি সদস্য মাসুক আহমদকে সাথে মোটরসাইকেলযোগে আলীমপুর গ্রামে একটি জানাযার নামাজে অংশগ্রহণের জন্য রওয়ানা দেন উত্তর শাহবাজপুর ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান আবুল হোসেন আলম। লাতু বিজিবি ক্যাম্পের কাছে পৌঁছলে আগে থেকে সেখানে ওতপেতে থাকা কাজল মিয়া চলন্ত মোটরসাইকেলের পেছনে বসা আবুল হোসেন আলমের বাম হাতে কোপ দিয়ে মোটর সাইকেলসহ তাকে রাস্তায় ফেলে উপর্যুপরি কুপিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা আলমকে দ্রুত উদ্ধার করে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত আবুল হোসেন আলম সায়পুর গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে। আলমের মৃত্যু সংবাদ শুনে উত্তেজিত জনতা সায়পুর গ্রামের মনু মিয়ার ছেলে কাজল মিয়ার বাড়ি ও বাড়ির সামনে দোকানঘর অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেন। এ ঘটনায় নিহত আলমের বাবা খলিলুর রহমান বাদী হয়ে কাজল মিয়াকে প্রধান এবং আরো কয়েক জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে বড়লেখা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহবাজপুর তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) ধ্রুবেশ চক্রবর্তী ২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রধান আসামি কাজল মিয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরবর্তীতে মামলাটি মৌলভীবাজার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। সম্প্রতি এই মামলায় মোট ২৮ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
এদিকে সোমবার (২৫ অক্টোবর) সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আলম হত্যা মামলার আসামী কাজল মিয়াকে ৩৪২ ধারায় পরীক্ষা করা হয়। এসময় বাদীপক্ষের আইনজীবী আসামি কাজলের জামিন বাতিলের জন্য আদালতে আবেদন করেন। শুনানী শেষে বিচারক আসামী কাজল মিয়ার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। শুনানিতে রাষ্ট্র পক্ষের কৌঁসুলি স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর সরওয়ার আহমদ চৌধুরী আবদালের সঙ্গে বাদীপক্ষের আইনজীবী খন্দকার সাইফুর রহমান রানা ও আইনজীবী ইমরান আহমদ অংশগ্রহণ করেন।