আজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হচ্ছে শেখ হাসিনা শিশু পার্ক

6

স্টাফ রিপোর্টার :
দক্ষিণ সুরমা এলাকার আলমপুরে জননেত্রী শেখ হাসিনা শিশু পার্ক আজ শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন সিলেট-১ আসনের সাংসদ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এর আগে দীর্ঘ ১৫ বছর পর সম্প্রতি পরীক্ষামূলক ভাবে এই পার্কটির উদ্বোধন করা হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সরকারি সফরসূচি অনুসারে, তিনি আজ শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে বিমানযোগে সিলেটে এসে পৌঁছাবেন। সন্ধ্যা ৬টায় তিনি শেখ হাসিনা শিশু পার্কের উদ্বোধন করবেন। পার্কের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন উপলক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)।
এর আগে গত ২৫ সেপ্টেম্বর ওই পার্কের পরীক্ষামূলক উদ্বোধন করা হয়। এ ধাপে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পার্কে বসানো রাইডগুলো ‘চেক’ করে দেখে। কিছু সংখ্যক লোককে পার্কে টিকেটের মাধ্যমে ঢুকতে দেওয়া হয়। মূলত রাইডগুলো চালিয়ে দেখা হয় যে কোনো সমস্যা আছে কিনা। এক্ষেত্রে যারা পার্কে ঢুকেছেন, তাদেরকে ‘পরীক্ষামূলক’ রাইড চালুর তথ্য জানিয়ে দেওয়া হয়। পরীক্ষামূলক এ যাত্রায় যেসব ছোটখাটো সমস্যা ছিল, তা সমাধান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
শেখ হাসিনা শিশু পার্কে বসানো রাইডগুলোর মধ্যে রয়েছে- রোলার কোস্টার, ম্যাজিক প্যারাস্যুট, মনোরেল, ভিজিটিং ট্রেন, রেলগাড়ি, পাইরেট শিপ, স্নিপার, সিসরাইড, বোট, টুইস্টার, বাম্পার কার, ফ্রুট ফ্লাইং চেয়ার, নাগরদোলা, ফ্যারসেল, জাম্পিং ফ্রগ প্রভৃতি।
জানা গেছে, ২০০৬ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকারের অর্থমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সাংসদ এম সাইফুর রহমানের উদ্যোগে এই পার্ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়। তখন মাটি ভরাট, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন স্থাপনসহ পার্কের অবকাঠামোগত কাজ শেষ হয়। সাইফুর রহমানের নামে পার্কটির নাম রাখার সিদ্ধান্ত হয় সে সময়। কিন্তু বিএনপি সরকার বিদায় নেওয়ার পর পার্কটির কাজে স্থবিরতা নেমে আসে।
বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ আছে, সাইফুর রহমানের নাম থাকায় সিসিকের তৎকালীন আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র পার্কটি চালু করতে উদ্যোগ নেননি। মধ্যখানে প্রায় ৮ বছর পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে পার্কটি। এরপর ২০১৩ সালে বিএনপি নেতা ও সাইফুর রহমানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত আরিফুল হক চৌধুরী মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পরে পার্কটি চালুর উদ্যোগ নেন। চীন থেকে আনা হয় বিভিন্ন ধরনের রাইড। ২০১৭ সালে শুরু হয় রাইড বসানো, বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপনের কাজ। কিন্তু নামকরণ জটিলতায় আটকে যায় পার্ক চালুর বিষয়টি। মেয়র আরিফ পার্কটি সাইফুর রহমানের নামে করতে একটি প্রস্তাবনা পাঠান স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু মন্ত্রণালয় তাতে সাড়া দেয়নি। এরপর ‘সিলেট ন্যাচারাল পার্ক’, ‘দক্ষিণ সুরমা পার্ক’ নামে পার্কটি করতে চায় সিসিক। কিন্তু স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এটি শেখ হাসিনার নামে করার প্রস্তাব তুলেন। সরকারের মন্ত্রণালয়ও এতে সায় দেয়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর সিসিকের ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হয়। এ বাজেটে ওই পার্কটির জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন খাতে ২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার কথা জানান মেয়র আরিফ। সবমিলিয়ে এ পার্কটিতে প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে বলে জানা গেছে।