জকিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
কুমিল্লার জের ধরে জকিগঞ্জের কালিগঞ্জে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় ৩-৪ শ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। জকিগঞ্জ থানার এস.আই আমিরুল সরকার বাদি হয়ে এ মামলা করেছেন।
এদিকে, এ ঘটনায় বুধবার দিবাগত রাতে কালিগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে নাশকতা সৃষ্টিকারী ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিষয়টি বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সিলেটভিউ-কে নিশ্চিত করেছেন সিলেট জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. লুৎফর রহমান।
বুধবার (১৩ অক্টোবর) সকালে কুমিল্লা শহরের নানুয়া দিঘীর উত্তরপাড়স্থ পূজা মণ্ডপে প্রতিমার পায়ের ওপর পবিত্র কুরআন রেখে অবমাননার একটি ছবি সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এর জের ধরে বুধবার সন্ধ্যারাতে সিলেটের জকিগঞ্জে পুলিশ ও বিক্ষুব্ধ জনতার মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ভাঙচুর করা হয় ইউএনও, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ওসি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের গাড়ি। ঘটনাটি বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার কালিগঞ্জ বাজারে ঘটে।
এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ও টিয়ার শেল ছুড়ে। সংঘর্ষে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মস্তুফা উদ্দিন ও পুলিশ-জনতাসহ ৩৫/৪০ জন আহত হন।
স্থানীয় ও পুরিশ সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার ঘটনার জের ধরে এর প্রতিবাদে কালিগঞ্জে সন্ধ্যার পরে মিছিল বের করার মাইকিং করা হয় এবং এশার নামাজের পর বিক্ষুব্ধ জনতা মিছিল বের করেন। মিছিল শুরু করেই দায়িত্বরত পুলিশের উপর চড়াও হয় মিছিলকারীরা। এরপর মিছিলটি মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে গিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের নিজস্ব গাড়ি রাখা দেখতে পেয়ে এসব গাড়িতে হামলা ওভাঙচুর চালান মিছিলকারীরা।
এসময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দিন চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমী আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন, ওসি আবুল কাসেম ইউনিয়ন পরিষদের ভিতরে অবস্থান করায় হামলাকারীদের কবল থেকে রক্ষা পান।
অনাকাঙ্ক্ষিত সকল ঘটনা ঠেকাতে পরে র্যাব ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বুধবার দিবাগত রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সিলেট জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন পিপিএম।
এ সময় জকিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দিন চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমী আক্তার, জকিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন, জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাসেমসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সিলেট জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে হামলা ও ভাঙচুরে জড়িত সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। পরে পুলিশের একাধিক টিম রাতভর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে গ্রেফতার করে।
অন্যদিকে, কালিগঞ্জসহ পুরো জকিগঞ্জে প্রতিটি পূজা মণ্ডপে নাশকতা ঠেকাতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা তৎপরতা।