ওসমানীনগর থেকে সংবাদদাতা :
ওসমানীনগরে জনপ্রতিনিধিসহ অধিকাংশ সদস্যদের অনুপস্থিতিতে সম্পন্ন হয়েছে উপজেলা পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভা। শারদীয় দূর্গা পূজাঁকে সামনে রেখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নীলিমা রায়হানা সভাপতিত্বে সোমবার অনুষ্ঠিত মাসিক আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সহ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানগণ উপস্থিত ছিলেন না। এছাড়া আইন শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য উপজেলা আওয়ামী লীগ দায়িত্বপ্রাপ্তরাসহ উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান ও তাদের প্রতিনিধিরা অনুপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। এতে পূর্ব নির্ধারিত সময় সোমবার সকাল ১১টায় সভা শুরুর কথা থাকলে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত অপক্ষো করে কমিটির প্রায় ১৮ জন সদস্যদের অনুপস্থিতিতে ৮-১০ জন সদস্যদের নিয়ে স্বল্প সময়ের মধ্যে সভার কার্যক্রম শেষ করেছেন ইউএনও। উপজেলা আইন শৃঙ্খলা বাস্তবায়নে মত গুরুত্বপূর্ণ কমিটির সভায় উপজেলা পর্যায়ের সকল জনপ্রতিনিধিসহ ক্ষমতাসীন দলের দায়িত্বপ্রাপ্তদের সম্মেলিত ভাবে অনুপস্থিতি নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরসহ সচেতন মহলে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে ইউএনও নীলিমা রায়হানা জানিয়েছেন, আইন শৃঙ্খলা কমিটিসহ প্রশাসনের সকল কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট সকলকে যথা নিয়মে যথা সময়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাওয়াত দেয়া হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় ইউপি চেয়ারম্যানদের উপস্থিতি নিশ্চিতের বিষয়ে সেপ্টেম্বর মাসের সভায় রেজুলেশেনের মাধ্যমে অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে জনপ্রতিনিধিসহ ক্ষমতাসীন দলের সদস্যদের অনুপস্থিতির বিষয়ে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ইউএনও নীলিমা রায়হানা যোগদানের পর থেকে উপজেলা প্রশাসনের দপ্তরগুলোতে নানা অব্যবস্থাপনার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত থাকা ব্যক্তিদের ইন্দনে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডকে জনসম্মুকে নিয়ে আসাকে কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে ফাইল-পত্রে বাস্তবায়নের চেষ্টায় মেতে উঠেছেন। ফলে সরকারের সুফল জনগণের দোরগেড়ায় পৌঁছাতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এসব অব্যবস্থাপনা মূলক কার্যক্রমের ফলে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগ ঘরনার জনপ্রতিনিধিরা ঘোষণা দিয়ে প্রশাসনের সভাসহ কার্যক্রমগুলোতে অংশ গ্রহণ বর্জন না করলেও ক্ষমতাসীন দলের জনপ্রতিনিধি ও দায়িত্বশিলরা কৌশলে উপজেলা প্রশাসনের সভা সমাবেশ এড়িয়ে যাচ্ছেন। যার ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত দুর্গা পূজার প্রস্তুতি সভা, সোমবার আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভাসহ সংশ্লিষ্ট সকল কার্যক্রমে আওয়ামী লীগ ঘরনার জনপ্রতিনিধি বা উপজেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতাদের কাউকেই দেখা যাচ্ছে না। উপজেলা প্রশাসনের কার্যক্রমে অনুপস্থিতির বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ ইউপি চেয়ারম্যানরা প্রকাশ্য কোনো মন্তব্য করতেও রাজি হচ্ছে না। রহস্যজনক ভাবে সব কিছু এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তারা। সোমবার উপজেলা কমপ্লেক্সর হলরুমে অনুষ্ঠিত আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাজিব দাশ পুরকায়স্থ, ওসি শ্যামল বণিক, পল্লীবিদ্যুতের ডিজিএম মো. ফয়েজুল্লাহ, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার চক্রবর্তী, প্রেসক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল ধর, সাধারণ সম্পাদক শিপন আহমদ, শিক্ষা কর্মকর্তা শরিফ মো. নিয়ামত, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাহিমা খানম, সমাজসেবা কর্মকর্তা জয়তী দত্ত, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফিল্ড সুপার ভাইজার ইসমাইল আলী, শিক্ষিকা শিল্পী দাস, হাইওয়ে পুলিশের এস আই দেলোওয়ার ছাড়া কোনো সদস্যকে সভায় অংশ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। সভায় উপজেলার আইন শৃঙ্খলার বিষযে আলোচনাক্রমে বাজার এলাকায় ফুটপাত থেকে অবৈধ দখল উচ্ছেদ, অটোরিক্সা নিয়ন্ত্রণ ও যানজট নিরসন এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে টিকটক করার প্রবণতা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
