কাজিরবাজার ডেস্ক :
বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আজ আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক বসছে। এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে ঠিক কবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হবে। তবে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ইতিপূর্বে জানিয়েছেন, ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়া হবে। এ লক্ষ্যে আজ আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের পর শিক্ষামন্ত্রী বিষয়টি গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরবেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এদিকে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল শনিবার বলেছেন, স্কুল-কলেজ খোলার পর সপ্তাহে একদিন করে ক্লাস নেয়া হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ মাহবুব হোসেন বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কবে থেকে খোলা হবে তা আজ রবিবার বিকেল ৩টায় আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। স্কুল-কলেজ খোলার পর কী কী করণীয় সেসব বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
তিনি বলেন, করোনা মহামারীর কারণে প্রায় দুই বছর বন্ধ স্কুল-কলেজ। দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা অনেক পিছিয়ে গেছে, সেই ক্ষতি কিভাবে পুষিয়ে নেয়া যায় সে বিষয়ে আমরা কিছু পরিকল্পনা তৈরি করেছি। বৈঠকে আমরা তা উপস্থাপন করব। এসব পরিকল্পনা আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হবে। এরপর সব সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে। শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন বলেও জানান তিনি।
জানা গেছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া ও খোলার পর দীর্ঘদিনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পরিকল্পনা চূড়ান্তকরণ, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণ ও অনুসরণ পদ্ধতি প্রণয়ন, এসএসসি-এইচএসসি সমমান পরীক্ষাগুলো দ্রুত সম্পন্ন করাসহ বেশকিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এ বৈঠকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও জাতীয় পর্যায়ের টেকনিক্যাল কমিটির সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনা সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের নিচে নামলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে জাতীয় পরামর্শক কমিটি মতামত দিয়েছে। বর্তমানে এ হার ১০ শতাংশে নেমেছে। বিষয়টি বিবেচনা করে চলমান ছুটি আর বৃদ্ধি না করে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল-কলেজ খুলে দেয়া হবে। আজ রবিবারের বৈঠকের পর এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেয়া হবে।
জানা গেছে, আগামী ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল-কলেজ খুলে দেয়া হলেও শুরুতে চলতি বছরের এসএসসি-এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থীদের সপ্তাহে ছয়দিন করে ক্লাস নেয়া হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে একদিন ক্লাস হবে। একটি ক্লাসের শিক্ষার্থীদের তিনটি কক্ষে বিভাজন করে ক্লাস নেয়া হবে। এছাড়া প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণীর সপ্তাহে একদিন আর চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর সপ্তাহে ছয়দিন ক্লাস করানো হবে।
শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, স্কুল-কলেজ খোলার পর সপ্তাহে একদিন করে ক্লাস নেয়া হবে। শনিবার চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি কেয়ারের উদ্বোধনের পর তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, করোনাকালে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু থাকলেও সেটি যথেষ্ট নয়। তাই স্কুল-কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। খোলার পর আপাতত সপ্তাহে একদিন করে ক্লাস নেয়ার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। তবে পরিস্থিতি সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের সম্ভাবনাও রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় চমেক হাসপাতালে ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি কেয়ারের জরুরী সেবা চালু হয়েছে। এতে এক ছাদের নিচে সব ধরনের জরুরী সেবা মিলবে। রোগীরা এখানেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সেবা পাবেন। ফলে বিভিন্ন ওয়ার্ডে রোগীদের চাপ কমে যাবে।