স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট-৩ আসনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে কাল শনিবার ৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছরের ১১ মার্চ আসনটির সাংসদ আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী মারা যাওয়ায় এ উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ইলেকশন কমিশনের (ইসি) নির্দেশনা অনুযায়ী গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বন্ধ হয়েছে প্রার্থীদের পক্ষে প্রচার-প্রচারণা। এদিকে উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে বৃহস্পতিবার রাত থেকে মাঠে নামছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ভোটের পর পরদিন রবিবার পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করবেন। সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সল কাদের বৃহস্পতিবার তথ্যগুলো জানান।
তিনি জানান, দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ একাংশ- এই ৩ উপজেলা নিয়ে গঠিন সিলেট-৩ আসনের নির্বাচনকালীন সময়ে সকল অনিয়ম প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তাগণের সমন্বয়ে ২ সদস্যবিশিষ্টি একটি ‘নির্বাচনী তদন্ত কমিটি’ গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন। কমিটিতে রয়েছেন সিলেটের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ তাসলিমা শারমিন ও সিনিয়র সহকারী জজ নির্জন কুমার মিত্র।
এছাড়া আসনটির ভোটগ্রহণ উপলক্ষে ৩ জন ম্যাজিস্ট্রেটও নিয়োগ দিয়েছে ইসি। এর মধ্যে সিলেটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুর রজমান ভূঁঞাকে দক্ষিণ সুরমা উপজেলায়, অঞ্জন কান্তি বালাগঞ্জ উপজেলায় এবং সিলেটের মেট্রোপলিট্রন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুমন ভূঁইয়াকে ফেঞ্জুগঞ্জ উপজেলায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরা নির্বাচনের আগে দুইদিন, পরে দুইদিন ও নির্বাচনের দিন- অর্থাৎ ২ থেকে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট পাঁচদিন নির্বাচনী মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন।
নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সল কাদের আরও জানান, ভোটগ্রহণের দিন কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলা। ৪ সেপ্টেম্বর সাধারণ ভোটকেন্দ্রে থাকবে পুলিশ, আনসার ও গ্রাম পুলিশের ১৭ থেকে ১৮ জন সদস্য। আর ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে নিয়োজিত থাকবে ১৮ থেকে ১৯ জন সদস্য। এদের মধ্যে পুলিশ আর অঙ্গিভূত আনসার সদস্যের কাছে অস্ত্র থাকবে। তারা সার্বক্ষণিক ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা দেবেন।
পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে গঠিত মোবাইল ফোর্স ২১টি, স্ট্রাইকিং ফোর্স ১২টি, র্যাবের ১২টি টিম ও ১২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে আগামী ২ থেকে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। বিজিবির সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন যেকোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা মোকাবিলায়। ভোটগ্রহণের দিন নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিতকরণ ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত রাখা হবে ২১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। অন্যদিকে রিটার্নিং অফিসার ও প্রিজাইডিং অফিসারের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রের অভ্যন্তরে কিংবা ভোট গণনা কক্ষের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে দায়িত্ব পালন করবে।
এছাড়া নির্বাচন কার্যালয়সমূহ, রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের নিরাপত্তা বিধান করা, স্থানীয় জননিরাপত্তা, কেন্দ্রে ভোটারদের সুশৃঙ্খল লাইন করানোসহ স্থানীয় শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণ, সংশ্লিষ্ট এলাকার কেন্দ্র সমূহের ইভিএম ও ইভিমের কারিগরি সহায়তায় নিয়োজিতও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে পুলিশ। আবার ভোটারদের জন্য আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করাও এ বাহিনীর দায়িত্ব।