কাজিরবাজার ডেস্ক :
আগামী ফেব্রুয়ারিতে শেষ হচ্ছে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ। এরই মধ্যে নতুন কমিশন গঠনের বিষয়ে আলাপ আলোচনা শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে প্রস্তাবনাসহ রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দেওয়ার কথা জানিয়েছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব বলেছেন, ‘যদি আগের পদ্ধতি অনুসরণ করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়, আমাদের কাছে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। আমরা চিন্তা করছি, সময়মতো রাষ্ট্রপতিকে আমাদের প্রস্তাব দেব।’
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠন করা হয়েছে। এটিই স্বচ্ছ প্রক্রিয়া। ভবিষ্যতেও এ স্বচ্ছ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে।
শুধুমাত্র শেখ হাসিনার সরকারের আমলেই রাষ্ট্রপতির উদ্যোগে সব দলের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। এর আগে অন্য কোনো সরকার এটি করেনি। এমনকি বিএনপিও এটি করেনি। তাদের সময়ে বিচারপতি আজিজকে নিয়োগ দেয়া নিয়ে নানা বিতর্ক আছে।
২০১৭ সালে গঠন হয় বর্তমান নির্বাচন কমিশন। ওই সময় আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ সব দলের সঙ্গে আলোচনা করেন রাষ্ট্রপতি। সবার প্রস্তাবনার ভিত্তিতে সার্চ কমিটির মাধ্যমে বাছাই করে কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের কমিশন গঠন করা হয়। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে এ কমিশনের মেয়াদ। তার আগেই প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশারদের নাম চূড়ান্ত করতে হবে।
জানা গেছে, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু হবে জানুয়ারিতে। এরই মধ্যে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মাঠে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। দলটির মহাসচিবও গণমাধ্যমে কথা বলেছেন। তারই সূত্র ধরে ক্ষমতাসীনরাও তাদের মতামত তুলে ধরেছেন।
এ নিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘আমাদের বর্তমান নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় গঠন করা হয়েছে। মহামান্য রাষ্ট্রপতি সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সার্চ কমিটি গঠন করে। সেই সার্চ কমিটির মাধ্যমে সব রাজনৈতিক দলের প্রস্তাবিত নামগুলো থেকে বাছাই করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। এটিই সবচেয়ে স্বচ্ছ প্রক্রিয়া। এই কমিশনের মেয়াদ শেষ হলে ভবিষ্যতেও স্বচ্ছ প্রক্রিয়াই নির্বাচন কমিশন গঠন হবে।’
তিনি বলেন, ‘এজন্য মির্জা ফখরুল বা কারও চিঠি দেয়ার প্রয়োজন নেই। দেশের মানুষ কী তাদের আজিজ মার্কা কমিশনের কথা ভুলে গেছে? আওয়ামী লীগ কখনোই নাটকবাজ বা এ ধরনের নির্বাচন কমিশনে বিশ্বাসী নয়। আওয়ামী লীগ সব সময় স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস করে এবং সেটিই অনুরসণ করে।’
আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, এ বিষয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা হয়নি। এটি রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার। আগে তো একটি প্রক্রিয়া (সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে সার্চ কমিটি গঠন ও তাদের প্রস্তাবের আলোকে নিয়োগ) অনুসরণ করা হয়েছে। হয়তো সেভাবেই হবে।’
তিনি বলেন, ‘শুধু শেখ হাসিনার সরকারের আমলেই রাষ্ট্রপতির উদ্যোগে সব দলের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। এর আগে অন্য কোনো সরকার এটি করেনি। এমনকি বিএনপিও এটি করেনি। তাদের সময় বিচারপতি আজিজকে নিয়োগ দেয়া নিয়ে নানা বিতর্ক আছে।’
লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘যেহেতু সুনির্দিষ্ট আইন এখনও পাস হয়নি। আমরা বরাবরের মতো মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ জানাবো, সার্চ কমিটি করার জন্য। অর্থাৎ এটা রীতি-নীতির মাধ্যমেই মহামান্য রাষ্ট্রপতি করবেন। সার্চ কমিটি গঠনের আগে হয়তো আবার সব দলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের ডাকবেন। তবে প্রক্রিয়াটা শুরু হবে জানুয়ারি মাসে।’