কাজিরবাজার ডেস্ক :
ভোলায় গ্যাস পাওয়ার পরই দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর দিকে নজর দিচ্ছে বাপেক্স। বিশেষ করে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লা ও বরিশালের বিস্তীর্ণ এলাকায় দ্বিতীয় এবং তৃতীয়মাত্রার জরিপ চালানোর উদ্যোগ নিয়েছে রাষ্ট্রীয় তেল-গ্যাস উত্তোলন কোম্পানিটি।
বাপেক্স সূত্র বলছে, একই ধরনের ভূতাত্ত্বিক গঠনের কারণে ভোলার মতো বাকি জেলাগুলোতেও গ্যাসের মজুত থাকতে পারে।
জানতে চাইলে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, দেশীয় গ্যাসের অনুসন্ধান ও উৎপাদনে আমাদের বিশেষ নজর রয়েছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাপেক্সকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যার জন্য দ্বিতীয় এবং তৃতীয়মাত্রার ভূতাত্ত্বিক জরিপের যন্ত্রাংশ কেনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করছি ওই এলাকায় আরও গ্যাস পাওয়া যেতে পারে। এ জন্য অনুসন্ধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
বাপেক্স সূত্র বলছে, তৃতীয়মাত্রার একটি জরিপ পরিচালনার জন্য ২৩৭ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের ৪৩৭তম বোর্ডসভায় প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়। যার আওতায় এক হাজার ৬০০ লাইন-কিলোমিটার এলাকায় তৃতীয়মাত্রার জরিপ হবে। নোয়াখালীর সুবর্ণচর ছাড়াও ভোলার চরফ্যাশন, লালমোহন, তজুমোদ্দিন, বোরহানউদ্দিন উপজেলাজুড়ে অনুসন্ধান চালানো হবে।
তৃতীয়মাত্রার জরিপের ফলাফল বিশ্লেষণ করে সেখানে অনুসন্ধান কূপ খনন করা হবে। চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ৩০ জুন এ প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে।
এ ছাড়া একই সময়ে একটি দ্বিতীয় মাত্রার ভূতাত্ত্বিক জরিপও চালানো হবে। তাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫৫ কোটি টাকা। অনুসন্ধান এলাকার মধ্যে আছে শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও বরিশালের কিছু এলাকা। এই অনুসন্ধান চালানো হবে ৩ হাজার ২২০ লাইন-কিলোমিটার এলাকায়।
বলা হচ্ছে, বিদেশ থেকে সিসমিক কাজে পারদর্শী লোকবল দিয়ে বাপেক্স প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
শরীয়তপুরেও কূপ খননের উদ্যোগ নিয়েছে বাপেক্স। এজন্য ৯৫ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ২৬ জুলাই এই প্রকল্পের পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ করতে চায় বাপেক্স।
এর আগে এই এলাকায় দ্বিমাত্রিক জরিপ চালিয়ে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানায় বাপেক্স। যদিও কূপ খননের আগে কোথাও গ্যাস রয়েছে এমনটা ঘোষণা করা যায় না।
দেশে শুধু সিলেট এলাকায় গ্যাসের বড় মজুত রয়েছে বলে ধারণা করা হতো। এ অঞ্চলে দেশের সবক’টি বড় গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দক্ষিণের জেলাগুলোর প্রতিও বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।