দেশবাসীর বহু আকাক্সিক্ষত স্বপ্নের পদ্মা সেতুর কাজ সমাপ্ত প্রায়। ইতোমধ্যে সড়ক যোগাযোগের কাজও শেষ হয়েছে। রেলপথ নির্মাণের কাজ চলছে জোরেশোরে। একাধিক সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজও প্রায় শেষ। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২২ সালের জুন নাগাদ চালু হতে পারে পদ্মা সেতু। তাতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বৃহৎ জনগোষ্ঠী ও জনপদের সঙ্গে স্থাপিত হবে সরাসরি সংযোগ। ফলে সময় সাশ্রয়সহ গতিশীল হবে অর্থনীতির চাকা। রাজধানীতে মেট্রোরেলের পরীক্ষামূলক চলাচল দৃশ্যমান হয়েছে ইতোমধ্যে। যা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হতে পারে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। ফলে রাজধানীর অসহনীয় যানজট সমস্যার সমাধানসহ নগরবাসীর চলাচলে গতি সঞ্চার হবে স্বভাবতই। সাশ্রয় হবে সময় ও অর্থের। অন্যদিকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মীয়মাণ বঙ্গবন্ধু টানেলের একটি টিউবের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অন্যটিও শেষ হওয়ার পথে। এটি সচল হতে পারে ২০২২ সালের ডিসেম্বর নাগাদ। ফলে কক্সবাজার-টেকনাফ হয়ে মিয়ানমার থেকে চীনের কুনমিং সিটি পর্যন্ত স্থাপিত হবে সড়ক ও রেল যোগাযোগ। একদিকে ভারত-নেপাল-ভুটান, অন্যদিকে মিয়ানমার-চীন পর্যন্ত সরাসরি সড়ক ও রেল যোগাযোগ স্থাপিত হলে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতির চেহারা বদলে যেতে বাধ্য। বাংলাদেশ হবে এর কেন্দ্রবিন্দু। পাশাপাশি চলমান চট্টগ্রামের মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দর, পায়রা বন্দর, মহেশখালীতে এলএনজি টার্মিনাল, মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরী, রামপাল ও বাঁশখালীতে দুটি বৃহৎ কয়লা বিদ্যুত কেন্দ্র, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রসহ অন্তত ১০টি মেগা প্রকল্পের কাজ।
স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছরে বাংলাদেশের সামষ্টিক ও ব্যাস্টিক অর্থনীতির বিস্ময়কর রূপান্তর ঘটেছে। নারী ও শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ নানা সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় একটি মডেল। এমনকি প্রতিবেশী দেশ ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।
২০২৪ সালের মধ্যে একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত এবং ২০৪১ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বর্তমান সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ। তবে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হলে যে কোন মূল্যে গণতন্ত্রকে আরও সংহত ও শক্তিশালী করতে হবে। আশার কথা এই যে, বাংলাদেশে উন্নয়ন ও গণতন্ত্র হাত ধরাধরি করে চলছে।