তালেবানদের হাতে অবশেষে কাবুল সরকারের পতন, দেশ ছাড়লেন আফগান প্রেসিডেন্ট

15

কাজিরবাজার ডেস্ক :
তালেবানের সশস্ত্র অভিযানের মুখে দেশ ছাড়লেন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি। রবিবার তিনি আফগানিস্তান ছেড়ে প্রতিবেশী দেশ তাজিকিস্তানের উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে জানতে আফগান প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায়, নিরাপত্তাজনিত কারণে আশরাফ গানির গতিবিধি সম্পর্কে এই মুহূর্তে কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।
এর আগে, রবিবার সকালে কাবুলে প্রবেশ করা তালেবানের এক প্রতিনিধি জানিয়েছিলেন, তারা আফগান প্রেসিডেন্টকে খুঁজছেন।
তালেবানের সশস্ত্র অভিযানের মুখে আশরাফ গানি দেশ ছেড়েছেন অথবা ছাড়তে পারেন বলে বেশ কিছু গণমাধ্যমে আগেই খবর ছড়িয়েছিল। তবে রবিবার বিকেলেও কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছিল, আফগান প্রেসিডেন্ট কাবুলেই রয়েছেন। সস্ত্রীক প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে সময় কাটাচ্ছেন তিনি।
গত কয়েকদিনে একের পর এক শহর তালেবানের দখলে চলে গেলেও এ নিয়ে মুখ খুলতে দেখা যায়নি আশরাফ গানি বা তার সরকারের কোনো শীর্ষ কর্মকর্তাকে। এমনকি দেশের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বৃহত্তম শহর কান্দাহার ও হেরাত তালেবানের দখলে চলে যাওয়ার পরও আফগান সরকারের কোনো সাড়াশব্দ ছিল না।
অবশেষে শনিবার বিকেলে জনতার উদ্দেশে ভাষণ দেন আফগান প্রেসিডেন্ট। পূর্বে রেকর্ড করা এক ভিডিওবার্তায় তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন তিনি। তবে সেই বক্তব্যের ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই দেশ ছেড়ে পালালেন পশ্চিমা-সমর্থিত এ নেতা।
প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ সহযোগীরাও তার সঙ্গে দেশ ছেড়েছেন বলে জানিয়েছে আফগান টেলিভিশন নেটওয়ার্ক টোলো নিউজ। এমনকি আফগান ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহও দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে।
টোলো নিউজের খবরে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিসমিল্লাহ মোহাম্মদি জানিয়েছেন, চলমান সংকট সমাধানের দায়িত্ব দেশটির রাজনৈতিক নেতাদের হাতে তুলে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট গানি। এর ধারাবাহিকতায় আফগান পরিস্থিতি নিয়ে তালেবানের সঙ্গে আলোচনার জন্য সরকারের একটি প্রতিনিধি দল দোহা যাচ্ছে। এই দলে রয়েছেন ইউনুস কানুনি, আহমাদ ওয়ালি মাসুদ, মোহাম্মদ মোহাকিকের মতো প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারা।
সূত্রের বরাতে আফগান সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, রাজনৈতিক সমঝোতার পর আশরাফ গানি পদত্যাগ করবেন এবং একটি অস্থায়ী সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দেবেন, এমন শর্তে রাজি হয়েছে তালেবান।
আফগান কর্মকর্তারা বলছেন, তারা সাম্প্রতিক সংকটের একটি রাজনৈতিক সমাধান ও চলমান সহিংসতা বন্ধের উপায় খুঁজছেন। তালেবানের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে, তারা শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের পক্ষে।