অলিম্পিক ফুটবলে টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল

12

স্পোর্টস ডেস্ক :
২০০২ সালে ইয়োকোহামার এই নিশান স্টেডিয়ামেই জার্মানিকে হারিয়ে সর্বশেষ বিশ্বকাপ জিতেছিলেন রোনালদো-রোনালদিনহো-রিভালদোরা। সেই মাঠেই ১৯ বছর পর অলিম্পিক সোনা ধরে রাখার লক্ষ্যে খেলতে নেমে ইউরোপের দেশ স্পেনের কঠিন প্রতিরোধের মুখে পড়েছিল ব্রাজিলিয়ানরা। কিন্তু যে স্টেডিয়ামটি তাদের জন্য পয়মন্ত ভেন্যু, সেটা কিভাবে খালি হাতে ফিরিয়ে দেবে?
দিলও না। নির্ধারতি ৯০ মিনিট ১-১ গোলে সমতা থাকার পর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেই দুর্দান্ত এক গোল করলেন ব্রাজিলের ম্যালকম। সেই গোলেই টোকিও অলিম্পিকের স্বর্ণ জয় নিশ্চিত হলো লাতিন আমেরিকার দেশটির। ২০১৬ সালের পর টানা দ্বিতীয়বার অলিম্পিকের স্বর্ণ জিতলো সেলেসাওরা।
২০১৬ রিও অলিম্পিকে প্রথম নেইমারের হাত ধরে অলিম্পিক ফুটবলের স্বর্ণ জয় করেছিল ব্রাজিল। সেবার টাইব্রেকারে জার্মানিকে হারিয়েছিল তারা। টাইব্রেকারের শেষ শটটি নিয়েছিলেন নেইমার। ৫ বছর পর টোকিওয় দানি আলভেজের নেতৃত্বাধীন ব্রাজিল সেই স্বর্ণ পদকটি ধরে রাখলো।
ইয়োকোহামার নিশান স্টেডিয়ামে ম্যাচের প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে গোল দিয়ে এগিয়ে গিয়েছিল ব্রাজিল। দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি এসে দুর্দান্ত এক গোলে স্পেনকে সমতায় ফেরান স্পেনের মাইকেল ওইয়ারজাবাল। এরপর একের পর এক আক্রমণ শানিয়েও গোল আদায় করতে পারলো না কেউ। যার ফলে খেলা গড়াল অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। এরপর খেলার ১০৮ মিনিটেই ম্যালকমের গোলে জয় নিশ্চিত হয় সেলেসাওদের।
১০৮তম মিনিটে প্রায় মাঝ মাঠ থেকে বলে পাস বাড়ান অ্যান্টোনি। স্পেনের ডিফেন্সিভ হাফে বল পেয়ে যান ম্যালকম। তিনি এককভাবে বল নিয়ে এগিয়ে যান এবং বাম প্রান্তের দুরহ কোন থেকে বাম পায়ে দুর্দান্ত এক শট নেন। যেটি গিয়ে আশ্রয় নেয় স্পেনের জালে। ২-১ গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল।
অথচ নির্ধারিত ৯০ মিনিটে বেশ কয়েকবার দুর্ভাগ্যের মুখোমুখি হয় ব্রাজিল। পেনাল্টি মিস হয়, বল ফিরে আসে পোস্টে লেগে। না নির্ধারিত সময়েই দুয়ের অধিক গোল হতে পারতো ব্রাজিলিয়ানদের। ৬১ মিনিটে স্পেন যে গোলটি দিয়েছিল সেটা ছিল দুর্দান্ত। কার্লোস সোলারের ক্রস থেকে বল পেয়ে বক্সের একেবারে বামপ্রান্ত থেকে বাম পায়ের দুর্দান্ত শটে ব্রাজিলের জালে বল জড়িয়ে দেন ওইয়ারজাবাল।
প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে, অতিরিক্ত সময়ে গোল করে ব্রাজিলকে এগিয়ে দিলেন ম্যাথিয়াস চুনহা।
ব্রাজিল অধিনায়ক দানি আলভেজের পাস থেকে বল পেয়ে বক্সের মধ্যখান থেকেই ডান পায়ের দারুণ এক শটে স্পেনের জাল কাঁপিয়ে দেন চুনহা।
৩৬ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো ব্রাজিল। কোপা আমেরিকায় ব্রাজিলের হয়ে খেলা ফুটবলার রিচার্লিসন যদি পেনাল্টিটা মিস না করতেন। স্পেনের বক্সের মধ্যে ম্যাথিয়াস চুনহাকে ফাউল করেন স্পেনের গোলরক্ষক উনাই সিমোন। ভিএআর দেখে রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন। স্পট কিক নিতে আসেন রিচার্লিসন। কিন্তু তিনি শটটি মেরে দেন পোস্টের ওপর দিয়ে।
৩২ মিনেটে মার্কো আসেনসিওর ব্রাজিল গোলমুখে দারুণ একটি শট ফিরিয়ে গোল গোলরক্ষক সান্তোস। পাস দিয়েছিলেন চুচুরেলা। ২৫ মিনিটে রিচার্লিসন গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন। গুইলার্মে আরেনার কাছ থেকে বল পেয়ে বক্সের একেবারে কাছ থেকে শট নেন তিনি। কিন্তু বলটি চলে যায় জালের বাইরে। ১৯ মিনিটে নিজেদের জালেই বল জড়িয়ে দিচ্ছিল প্রায় ব্রাজিল। কোনোমতে নিজেই সেই বল ঠেকিয়েছিলেন ডগলাস লুইজ।