গবেষণায় তথ্য প্রকাশ ॥ করোনায় মৃত্যু ঠেকাতে টিকা ৯৯ শতাংশ কার্যকর

10

কাজিরবাজার ডেস্ক :
করোনায় মৃত্যু ঠেকাতে টিকা ৯৯ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর। এ রোগের সবচেয়ে শক্তিশালী ধরন ডেল্টা ঠেকাতেও টিকা সমান কার্যকর। শনিবার প্রকাশিত ভারতীয় বিজ্ঞানীদের এক গবেষণায় এ কথা বলা হয়েছে। ডেল্টা করোনার ভারতীয় ধরন হিসেবে পরিচিত। পুনেভিত্তিক ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির (এনআইভি) গবেষকরা এ গবেষণা পরিচালনা করেন।
টিকাগ্রহণকারীদের সংক্রমণ এবং মৃত্যু নিয়ে কোভিড-১৯ মহামারীকালে এটাই ভারতে সবচেয়ে বড় গবেষণা। গবেষকরা যেসব নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিয়ের ভিত্তিতে ফল পেয়েছেন, তাতে করোনার আলফা, কাপ্পা, ডেল্টার সঙ্গে ডেল্টা প্লাস নমুনাও রয়েছে। প্রকাশিতব্য এই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ভারতে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মূল কারণ হচ্ছে ডেল্টা, যে ধরনটি ২০২০ সালের অক্টোবরে ভারতে প্রথম শনাক্ত হয়েছিল। গত বছর করোনা প্রাদুর্ভাবের পর পরিস্থিতি সামলে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলা ভারতের নাভিশ্বাস ওঠে এই বছর দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রকোপে। গত এপ্রিলে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা নজিরবিহীনভাবে বেড়ে গেলে প্রবল চাপে পড়ে দেশটি। এরপর ভারত টিকাদানে গুরুত্ব বাড়ায়, নিজেদের চাহিদা মেটাতে কোভিড টিকা রফতানিতে নিষেধাজ্ঞাও দেয় বিশ্বে টিকা উৎপাদনকারী সর্ববৃহৎ দেশটি। এনআইভির গবেষক ড. প্রজ্ঞা যাদব বলেন, গবেষণায় যে গুরুত্বপূর্ণ দিকটি আমরা দেখতে পেয়েছি, তা হলো মৃত্যু ঠেকাতে টিকা ৯৯ শতাংশ কার্যকারিতা দেখাচ্ছে, এমনকি তা অতিসংক্রমণশীল ডেল্টার দাপটের মধ্যেই। গবেষণার জন্য গত মার্চ থেকে জুনের মধ্যে মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, পশ্চিমবঙ্গসহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর সেই সব নমুনার জিন বিশ্লেষণ করা হয়। ড. যাদব বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে, অধিকাংশই ডেল্টা ধরনে আক্রান্ত। এদের মাত্র নয় শতাংশকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। আর মৃত্যু হয়েছে মাত্র শূন্য দশমিক ৪ শতাংশের। এই গবেষণায় তুলনামূলক কম বয়সীদের গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। গবেষণা চালানো ৪৪ শতাংশের বয়স ছিল ৩১ থেকে ৫৬ বছর বয়সী। আর ৬৫ শতাংশই পুরুষ। গবেষণায় আসা ব্যক্তিদের ৭১ শতাংশই ছিল সংক্রমণের লক্ষণযুক্ত। এরমধ্যে ৬৯ শতাংশের উপসর্গ ছিল জ্বর, গায়ে ব্যথা, মাথাব্যথা, সর্দি ছিল ৫৬ শতাংশের। ৪৫ শতাংশের কাশি এবং ৩৭ শতাংশের গলাব্যথার মতো উপসর্গ ছিল। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, শনিবার পর্যন্ত ৪ কোটি ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। ১৩৬ কোটি মানুষের দেশ ভারতে ২ কোটির মতো মানুষ টিকার অন্তত একটি ডোজ পেয়েছেন। শনিবার ভারতে আরও ৩৮ হাজার নতুন রোগী শনাক্তের খবর আসে। এ নিয়ে দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ৩ কোটি ১০ লাখ ৬৪ হাজারে।