কে. এম লিমন গোয়াইনঘাট থেকে :
টানা দুই মাস বন্ধ থাকার পর শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে মঙ্গলবার থেকে গোয়াইনঘাট উপজেলার তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে ফের আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিন পর পুনরায় আমদানি-রপ্তানি চালু হওয়ায় তামাবিল স্থল বন্দরের ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের মাঝে বইছে খুশির আমেজ। শুরুর প্রথম দিনে মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে এ প্রতিবেদন লেখার সময় ৩টা পর্যন্ত ভারতীয় পাথরবাহী ৫টি ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বুধবার সকাল থেকে পুরোদমে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হবে বলে তামাবিল ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা জানিয়েছেন।
তামাবিল কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, দেশে চলমান করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তামাবিল স্থল বন্দরের কার্যক্রম সচল থাকলেও ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় গত এপ্রিল মাসের শেষের দিকে মেঘালয় জুড়ে লকডাউন ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। ফলে গত ১ মে থেকে ডাউকি স্থলবন্দরের পাশাপাশি সকল প্রকার পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় ভারত। যার কারণে দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ডাউকি স্থলবন্দর দিয়ে চুনাপাথর, পাথর ও কয়লাসহ আমদানি-রপ্তানিযোগ্য কোন পণ্য তামাবিল স্থলবন্দরে প্রবেশ করেনি।
সম্প্রতি মেঘালয়ে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার ফলে বিগত কয়েকদিন ধরে স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী সংগঠন ও ভারতীয় ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মাঝে আলোচনার ভিত্তিতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে প্রয়োজনীয় বিধি নিষেধ মেনে এই স্থলবন্দরটি চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা জানান।
এ বিষয়ে তামাবিল চুনাপাথর, পাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার হোসেন সেদু জানান, করোনার কারণে গত মে মাসের শুরু থেকেই ডাউকি স্থলন্দরের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় ভারত। র্দীঘদিন ধরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকার ফলে তামাবিল স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা বেশ বড় ধরণের ক্ষয়-ক্ষতির সম্মূখীন হয়ে পড়েছেন। ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন স্থলবন্দর সংশ্লিষ্ট কয়েক হাজার শ্রমিক। তিনি বলেন, তামাবিল স্থল বন্দরের ওপর প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ব্যবসায়ী এবং শ্রমিক মিলে প্রায় ২০ হাজার মানুষ নির্ভরশীল। তাই এই বন্দর দিয়ে পুণরায় আমদানি-রপ্তানি চালু হওয়ায় এলাকার সর্বত্রই খুশির আমেজ বইছে।
এ ব্যাপারে তামাবিল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক মাহফুজুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। তবে যতটুকু জানি, শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমাদের স্থলবন্দরের কার্যক্রম চালু ছিল। কিন্তু চলমান লকডাউনের কারণে ভারত তাদের ডাউকি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছিল। প্রায় দুই মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে এই বন্দর দিয়ে ফের আমদানি-রপ্তানি চালু হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সতর্কতা হিসেবে প্রশাসনের উদ্যোগে এবং ব্যবসায়ী সংগঠনের সহযোগিতায় পণ্য নিয়ে আসা ভারতীয় প্রত্যেকটি পরিবহণে স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।