কাজিরবাজার ডেস্ক :
অপরাধের বিচারে সাজা বা ফাঁসি দিয়ে সমাজকে রক্ষা করা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
সন্তান হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামির আপিল শুনানিতে মঙ্গলবার (৬ জুলাই) এ মন্তব্য করেন তিনি।
করোনা মহামারির এই সময়ে কঠোর বিধি-নিষেধের মধ্যে মঙ্গলবার বাসা থেকে ভার্চুয়ালি ছয় বিচারপতির বেঞ্চে এ বিচার কাজ চলছিল। যেখানে আইনজীবী, আদালতের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সবাই বাসা থেকে যুক্ত হন।
শাশুড়ির সঙ্গে ঝগড়ার পর শিশু সন্তান হত্যার দায়ে ২০০৮ সালে বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জের জসিম রাঢীকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। যেটি ২০১৩ সালে হাইকোর্ট বিভাগ বহাল রাখেন। এরবিরুদ্ধে জসিম রাঢী আপিল করেন। যেটির শুনানি শেষে মঙ্গলবার সাজা কমিয়ে ১০ বছর করে দেন আপিল বিভাগ।
এ আপিলের শুনানির এক পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, সেনটেন্স (সাজা), হ্যাংগিং (ফাঁসি) কিন্তু সোসাইটিকে রক্ষা করে না। ভারতের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চেয়ে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোনো অংশে খারাপ না। সেখানে ২০১৯ সালে মৃত্যুদণ্ড হয়েছে ১২১ জনের। আর আমাদের এখানে ৩২৭টি।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, স্ত্রী হত্যা কি বন্ধ হয়েছে? স্ত্রী হত্যায় কোনো সাক্ষীও তো লাগে না। রাষ্ট্রপক্ষ ডাক্তারের রিপোর্ট নিয়ে এলেই স্বামীর ফাঁসি নইলে যাবজ্জীবন। আমার তো মনে হয় এটার একটা পরিসংখ্যান নেওয়া উচিত। ৮০ শতাংশ মামলায় স্বামীর সাজা হয়। এই যে সাজা হচ্ছে, ফাঁসি হচ্ছে, যাবজ্জীবন হচ্ছে, স্ত্রী হত্যা কি কমেছে? সুতরাং, এটা ভুল ধারণা যে সাজা দিলে আমরা একদম দুধের মধ্যে ভাসতে থাকবো।
তবে যেখানে ডেথ সেনটেন্স (মৃত্যুদণ্ড) হবে সেখানে তো ডেথ সেনটেন্স দিতেই হবে বলেও মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি।