কৃষি পুরস্কার প্রশংসনীয়

12

ভূমিনির্ভর বাংলাদেশের উৎপাদনের প্রধান সূচক এখন অবধি কৃষি। সমুদ্র ও নদীস্নাত বাংলার উর্বর পলিমাটি সুজলা-সুফলা শস্য শ্যামলাসমৃদ্ধ মাতৃভূমি তৈরিতে যে যুগান্তকারী অবদান রেখে যাচ্ছে, সেটা এখনও দক্ষিণ এশিয়ার এই ক্ষুদ্র দেশটির অপার সম্ভাবনা। এ দেশের পরিশমী শ্রমজীবী কৃষক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যে উদয়াস্ত খাটাখাটুনি করে তারই অভাবনীয় যোগসাজশে কৃষি অর্থনীতি আপন মর্যাদায় অভিষিক্ত। নতুন সময়ের আবেদন, আধুনিক জীবন প্রণালীর নিত্য বিবর্তন ছাড়াও বৈজ্ঞানিক সম্ভারের অনবদ্য আবিষ্কারে কৃষির সমৃদ্ধ আঙ্গিনায় যে বিপ্লব ঘটেছে, তাই বর্তমান বাংলাদেশের এক অনাবিল উপহার। কৃষির ক্ষেত্র, উপকরণ এবং উৎপাদনেও এসেছে নিরন্তর সম্প্রসারিত হওয়ার সুবর্ণ যুগ। বর্তমান সরকার নিত্য নতুন কর্মপরিকল্পনায় কৃষিজ পণ্যকে যে মাত্রায় এগিয়ে দিয়েছে, সেখানে বিশ্ব সভায় বাংলাদেশের অবস্থান আজ নজরকাড়া। কৃষিকে নিয়ে নতুন ভাবনা-চিন্তা, আধুনিক প্রযুক্তির বহুল ব্যবহার ছাড়াও প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় কৃষিজ ব্যবস্থাপনাকে ভিন্ন আঙ্গিকে নিয়ে যাওয়া সত্যিই এক অনবদ্য কর্মবৈচিত্র্য। আর এমন সব কৃষিজ দ্রব্য উৎপাদনে যারা নিরলস ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন, তাদের অনন্য অবদানকে যথাযোগ্য মর্যাদা দিতে বর্তমান সরকার কৃষি পুরস্কারও দিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় ‘কৃষি পুরস্কার’ প্রদান করে সফল কৃষি পণ্য উৎপাদনে ২৭ ব্যক্তি এবং ৫ প্রতিষ্ঠানকে সম্মানিত করা হয় তাদের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ১৪২৮ বঙ্গাব্দের বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার অনুষ্ঠানে অংশ নেন। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। পুরস্কারের মধ্যে আছে ৫টি স্বর্ণপদক, ৯টি রৌপ্যপদক এবং ১৮টি ব্রোঞ্জপদক। পুরস্কার প্রদানের এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী দেশের ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে কৃষি সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নের ওপর বিশেষ জোর দিয়ে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে উল্লেখ করেন কৃষি খাতের অভাবনীয় অগ্রযাত্রায় পরিশমী কৃষকরা যেমন কৃতিত্বের দাবিদার তেমনি কৃষি বিজ্ঞানী, সম্প্রসারণ কর্মকর্তারাও সমান সফলতার অধিকারী। প্রধানমন্ত্রী তাঁর উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে কৃষিকে সমধিক প্রাধান্য দেয়ার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। বিশ্ব সভায় মাথা তুলে দাঁড়াতে গেলে কৃষিতে নতুন বিপ্লবও অত্যন্ত জরুরী।