সোমবার থেকে সীমিত লকডাউন, বৃহস্পতিবার থেকে সর্বাত্মক

9

কাজিরবাজার ডেস্ক :
করোনার ভয়াবহ সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার ঘোষিত লকডাউন সোমবার শুরু হলেও বুধবার পর্যন্ত তা কিছুটা শিথিল থাকবে। খোলা থাকবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। আর বৃহস্পতিবার থেকে সারাদেশে সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হবে।
শনিবার রাতে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, অর্থবছরের শেষ সময় হওয়ায় লকডাউনের সিদ্ধান্তে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। সোমবার থেকে গণপরিবহন বন্ধ হয়ে যাবে। মার্কেট, হোটেল–রেস্তোরাঁসহ কিছু কিছু ক্ষেত্রে সীমিত পরিসরে লকডাউন শুরু হবে। এই সময়ে কিছু কার্যক্রম চালু থাকবে। আর ১ জুল্ইা থেকে সাত দিনের সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হবে।
এবারের সর্বাত্মক লকডাউনের প্রকৃতি কেমন হবে সেটা জানা যাবে রবিবার। এ ব্যাপারে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হবে বিস্তারিত।
এর আগে গত শুক্রবার সরকারি তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়েছিল, সোমবার থেকে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন শুরু হবে।
দেশে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু অব্যাহতভাবে বাড়ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে করোনাসংক্রান্ত জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটি ১৪ দিনের সর্বাত্মক শাটডাউনের সুপারিশ করে বৃহস্পতিবার। যদিও সরকার শাটডাউন নয়, এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে এই সময়সীমা আরও বাড়ানো হতে পারে।
বেশ কিছুদিন আগে থেকে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ভাইরাস দ্রুত ছড়ায় এবং এর সংক্রমণে মৃত্যুহার বেশি। ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সীমান্তবর্তী বেশ কিছু জেলায় কঠোর বিধিনিষেধ চলছে। তারপরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ঢাকার আশপাশের সাত জেলাতেও বিধিনিষেধ জারি করা হয় গত মঙ্গলবার থেকে। এবার তৃতীয়বারের মতো সারা দেশে লকডাউন ঘোষণা করা হলো।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। তার ১০ দিন পর প্রথম কোনো করোনা রোগী মৃত্যুর খবর জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ওই মাসের ২৬ তারিখ দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়, যেটি লকডাউন হিসেবে পরিচিতি পায়। কয়েক মাস কার্যত অচল থাকে গোটা দেশ। পরে সংক্রমণ আস্তে আস্তে কমতে থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া প্রায় সবকিছুতেই বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। প্রায় স্বাভাবিক হয়ে আসে দেশ। করোনা সংক্রমণ গত বছরের শেষ দিকে এমনকি চলতি বছরের শুরুর দিকে তিন শতাংশের নিচে নেমেছিল।
কিন্তু সংক্রমণের সেই নিম্নগতির ধারা ধরে রাখা যায়নি পরবর্তী সময়ে। চলতি বছরের মার্চ থেকে করোনা পরিস্থিতির আবার অবনতি হতে থাকে। এপ্রিলের শুরুতে সরকার দেশে বিধিনিষেধ এবং ১৪ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয়বারের মতোলকডাউন জারি করে। লকডাইন চলে সপ্তাহ খানেক, তবে টানা কয়েক বিধিনিষেধ চলার পর সংক্রমণ কমে আসায় শিথিল করা হয় সবকিছু।
করোনা সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের নিচে নেমে এলেও গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তা আবার অব্যাহতভাবে বেড়ে চলেছে। দিন দিন লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যু। এই পরিস্থিতিতে সারাদেশে শাটডাউনের সুপারিশ করে করোনাসংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।