কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
পুরাতন ঘর মেরামত ও চিকিৎসার দাবীতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মাধবপুর ইউনিয়নের পাত্রখোলা চা বাগানে কাজ বন্ধ রেখে চা শ্রমিকদের একটি অংশ চা বাগান কারখানার সামনে দেশীয় অস্ত্র তীর-ধনুক দা লাঠি নিয়ে অবস্থান করে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে।
এসময় চা বাগান পঞ্চায়েতের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দুটি গ্রুপের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। কারখানার গেইটের ভেতরে থাকা পাগলা ঘন্টাটি বার বার পিটিয়ে শ্রমিকদের একত্রিত করা হচ্ছে। উত্তেজিত শ্রমিকরা চা বাগানের কোন কর্মকর্তা- কর্মচারীকে কারখানার ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছেনা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে সহকারি পুলিশ সুপার (কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সার্কেল)-এর নেতৃত্বে চার গাড়ি পুলিশ অবস্থান করছে।
সোমবার (১৪ জুন) সকাল ৮টা থেকে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। সরজমিন গিয়ে বিক্ষোভকারী মহিলা শ্রমিক ফুলকুমারী চাষা,অলকা গঞ্জু, পহেলা গীতা,গোলশান বিবি,পুরুষ শ্রমিক নাগিনা নুনিয়া, শংকর কৈরী,রাধেশ্যাম গড়, জীবন তেলী,শ্রী পুজন দাসের সাথে আলাপকালে শ্রমিকরা অভিযোগ করে বলেন, চা সেকশনে বজ্রপাতের সময় আমাদের নিরাপত্তার কোন ব্যবস্থা নেই, ম্যানেজমেন্টের অনুগত লোকজন সকল সুযোগ সুবিদা ভোগ করলেও আমরা সাধারণ শ্রমিকরা তা থেকে বঞ্চিত। চা শ্রমিকদের দীর্ঘদিন থেকে বসত ঘরে বৃষ্টির পানি ঢুকলেও ম্যানেজমেন্ট মেরামত করে দিচ্ছেনা।
চিকিৎসার ক্ষেত্রেও একই অবস্থা বিরাজমান। দীর্ঘদিনের ক্ষোভ থেকেই আজকে দাবীদাওয়া নিয়ে এই বিক্ষোভে নেমেছি। পাত্রখোলা চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি শিপন চক্রবর্তী বলেন, গত ২০১৯ সাল থেকে এ চা বাগানের বেশ কিছু শ্রমিকের বসত ঘর ঝরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে।
বৃষ্টির সময় ঘরের ভেতর বৃষ্টির পানি পড়ে। চা বাগান কর্তৃপক্ষকে ঘর মেরামতের দাবি জানিয়ে আসলেও দেখা গেছে একটি পক্ষের চা শ্রমিকদের ঘর মেরামত করা হলেও প্রকৃত ঝরাজীর্ণ ঘর মেরামত ও সু- চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে না। এ দাবীতে সোমবার সকালে পাত্রখোলা চা বাগানের নারী ও পুরুষ চা শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে চা বাগান কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে দাবী আদায়ে বিক্ষোভ করছে।
ঘটনার খবর পেয়ে সোমবার সকাল ৯টায় সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (কমলগঞ্জ- শ্রীমঙ্গল সার্কেল) শহিদুল ইসলাম মুন্সী, কমলগঞ্জ থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসান ও পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। তবে ন্যাশনাল টি কোম্পানী (এনটিসি)-র এজিএম কাম পাত্রখোলা চা বাগান ব্যবস্থাপক শামছুল ইসলাম সেলিম মুঠোফোনে এ প্রতিনিধিকে বলেন, আসলে বাগান ব্যবস্থাপনার কোন সমস্যা নয়। চা বাগান পঞ্চায়েতের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দুটি গ্রুপের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এ বিরোধেই আজ পাত্রখোলা চা বাগানে এ অবস্থার সৃষ্টি।