তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার বাড়ছে

18

বর্তমান সরকার যেসব বিষয়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে তার একটি হচ্ছে তথ্য-প্রযুক্তি। সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চায়। এখন ব্যবসা-বাণিজ্যে অনলাইনের ব্যবহার আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। অনলাইনকেন্দ্রিক অর্থনীতি নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। শহরের সীমা ছাড়িয়ে ইন্টারনেট গ্রামাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে। তথ্য-প্রযুক্তির সুফল পাচ্ছে মানুষ। আবার একইভাবে সাইবার ক্রাইম বা তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধও বেড়ে চলেছে। মানুষ এ ধরনের অপরাধের শিকার হচ্ছে। ইন্টারনেটে আপত্তিকর ছবি প্রচার, ব্ল্যাকমেইল, প্রতারণার ফাঁদ পাতা হচ্ছে। এসব অপরাধের পরিধি বাড়ছে। সম্প্রতি ভারতে বাংলাদেশি এক তরুণীর নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহারের বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে। অনেক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে দেওয়ার দাবিও উঠেছে কোনো কোনো মহল থেকে।
কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের এক গবেষণায় বলা হয়েছিল, বর্তমানে দেশে যত সাইবার অপরাধ হয় তার প্রায় ৭০ শতাংশের শিকার হচ্ছে কিশোরী ও নারী। অন্যদিকে ভিনদেশি অ্যাপ টিকটক, লাইকি, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবসহ প্রচার ও যোগাযোগের প্রায় সব মাধ্যমে ওত পেতেছে সংঘবদ্ধ পাচারকারীচক্র। গত কয়েক মাসে একটি চক্রের শুধু টিকটকে পাতা ফাঁদেই পড়েছে সহস্রাধিক নারী ও শিশু। পাচারকারীদের এই চক্রটি মূলত ভারত, বাংলাদেশ ও দুবাইজুড়ে বিস্তৃত। তাদের নেটওয়ার্কও খুব শক্তিশালী।
অনলাইনভিত্তিক কিশোর গ্যাং যৌন হয়রানি, যৌন নিপীড়ন, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, রাহাজানি থেকে শুরু করে হত্যাকা-ের মতো বড় অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।
সাম্প্রতিক সময়ের বাস্তবতায় ‘সাইবার টহলদারি’ বাড়ানো খুব জরুরি। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সক্ষমতাও বাড়াতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে সাইবার নিরাপত্তা। অনলাইনের অপব্যবহার রোধ ও অনলাইনকেন্দ্রিক অপরাধ প্রতিরোধে আইনের কঠোর প্রয়োগ জরুরি হয়ে পড়েছে বলে আমরা মনে করি।