কাজিরবাজার ডেস্ক :
সরকার বিভিন্ন দেশ থেকে করোনার টিকা সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশে করোনাভাইরাসের টিকার কোনো সংকট হবে না।
মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি আয়োজিত করোনা সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিএনপির সমালোচনা করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ভ্যাকসিন সংকট ও করোনা মোকাবিলা নিয়ে বিএনপি সমালোচনা করলেও সরকার করোনা মোকাবিলায় যথাযথ উদ্যোগ নিয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ভারত তাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে করোনা টিকা দিতে পারছে না। তারপরও অন্যান্য সোর্স থেকে সংগ্রহ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর চেষ্টার কোনো কমতি নেই। ইনশাআল্লাহ অন্যান্য দেশ থেকে সময়মতো টিকা সংগ্রহ করতে পারবো। সেই ব্যাপারে সরকার সর্বাত্মক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। টিকার সংকট নিয়ে বিরোধীদল যেটা বলে আসছে সেটা এখানে সৃষ্টি হবে না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনাভাইরাসের প্রথম ঢেউ মোকাবেলার পরে এখন দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় আমরা ভালো অবস্থানে রয়েছি। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের সীমান্ত এলাকাগুলোতে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। প্রাণহানি বাড়ছে। এই অবস্থায় পরিস্থিতি স্টাবল এই কথা বলা যায় না। সংক্রমণ কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। মুত্যু ৩০, ৩৫ বা ৪০’র কোটায় আছে। তাও বলা যায় না।
‘করোনাভাইরাস আমাদের নিয়ন্ত্রণেই চলে এসেছিল। কিন্তু হঠাৎ করে বৃদ্ধি পায়। আসলে করোনা আনপ্রেডিক্টেবল। কখন যে কোন দিকে মোড় নিবে বলা মুশকিল। কাজেই আমাদের সবসময়ই সতর্ক থাকতে হবে।’-যোগ করেন কাদের।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, রাজশাহীতে করোনা পরিস্থিতি খারাপ রূপ নিয়েছে। সেখানে হাসপাতালে অক্সিজেনের এবং বেডের কিছুটা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সরকার সেটা সরবরাহ করছে। এখনও ভারতে যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল, সেই অবস্থার কারণ আমাদের সৃষ্টি হয় নাই। কারণ প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন। তিনি ঝড়ের সময়ও যথাযথ প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। করোনা আরও ভয়ংকর রূপ নিতে পারে এটা তার মাথায় আছে। এই জন্য তিনি সববিষয়ে যথাযথ নজর রাখছেন এবং ব্যবস্থা নিচ্ছেন। যেসব জায়গায় সংক্রমণ বেশি, সেখানে আঞ্চলিক লকডাউন দিচ্ছেন।
সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপি সরকারের ভালো উদ্যোগের প্রশংসা না করে অকারণে সমালোচনা করছে। কিন্তু এ দুঃসময়ে তারা জনগণের পাশে নেই।
করোনা বিষয়ে সরকারের সচেতনা এবং সতর্কতা নিয়ে যারা প্রশ্ন করেন, তারা বিরোধিতার খাতিরেই বিরোধিতা করেন। বাজেটও বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এই প্রণোদনা প্যাকেজগুলো দেওয়া হলো। এই টাকা কোথা থেকে আসছে? এটা কি বিরোধিদল দিচ্ছে? এটাতো সরকারি কোষাগার থেকে জনগণকে দিচ্ছে সরকারই। আমরা প্রথম ঢেউ অতিক্রম করেছি, দ্বিতীয় ঢেউও অতিক্রম করতে চলেছি। জীবন ও জীবিকার সমন্বয় করে সরকার পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে। এতে একজন মানুষও অনাহারে মারা গেছেন বলে আমাদের জানা নাই। সরকার অন্যান্য দেশের তুলনায় সফলভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছেন। এটা বিএনপি আর কতটা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হবে। তারা দেখেও দেখে না, শুনেও শুনে না। তারা কানে লাগিয়েছে তুলো। কিছুই শুনতে পায় না। তাদের চোখে ঠুলি। চোখেও দেখতে পায় না। ভালো কিছু তাদের চোখে পড়ে না। শুধু সমালোচনার জন্য দিনরাত বিষোদগার করছে।
বিএনপির দেশে গণঅভ্যুত্থানের ডাক দেওয়ার সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, যারা চেয়ারপারসনের মুক্তির জন্য আন্দোলন করতে পারে না, তাদের মুখে এটি মানায় না।
আন্দোলনের নামে দেশে সন্ত্রাস, নাশকতা, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ করা হলে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলেও অনুষ্ঠানে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন কাদের।
আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীর সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক রোকেয়া সুলতানা, কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম প্রমুখ।