কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
কানাইঘাট উপজেলায় মরণব্যাপি মাদক ইয়াবার আগ্রাসন দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে এক ধরনের উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দিন দিন ইয়াবা আসক্ত হয়ে পড়েছেন তরুণ যুবসমাজ সহ বিভিন্ন বয়সের লোকজন। অনেক কলেজ শিক্ষার্থীরা ইয়াবা আসক্ত হওয়ায় তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শংকিত হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা। মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের জিরো টলারেন্স নিতি থাকার কারণে অনেকে মাদক ব্যবসায়ী বোতলজাত মাদক বিক্রি ছেড়ে দিয়ে ইয়াবার খুচরা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছেন।
অনুসন্ধান সহ বিভিন্ন সূত্রের খবরে জানা যায় ইয়াবা বিক্রিতে অধিক লাভ থাকার কারণে অনেকে এ ব্যবসার সাথে কানাইঘাটে একটি বড় চক্র জড়িত রয়েছে। ইয়াবা ট্যাবলেট সহজে বিক্রি ও লোকানো যায় জামেলা কম সহজে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ার প্রবণতা কম থাকার কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে ইয়াবার ব্যবসা করছেন অনেকে। এক সময় কানাইঘাট উপজেলায় ইয়াবা আসক্তের সংখ্যা একেবারে কম ছিল ও ইয়াবার মতো মাদকের নাম জানত না অনেকে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে কানাইঘাটের পৌর শহরে কিছু এলাকা এবং সীমান্তবর্তী সুরাইঘাট, দনা, খাড়াবাল্লা, বৃহত্তর গাছবাড়ী সহ কিছু এলাকায় বর্তমানে ইয়াবার বিস্তার দিন দিন বাড়ছে। এক সময় যারা ভাসমান মাদক বিক্রি করত তারা এখন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে ইয়াবা খুচরা ও পাইকারী ভাবে বিক্রি করছে। অধিক লাভ থাকার কারণে বিভিন্ন ছাত্রাসায় এ ব্যবসার সাথে বর্তমানে অনেকে জড়িত হয়ে পড়েছেন। র্যাব, বিজিবি ও থানা পুলিশ বিভিন্ন সময় ইয়াবা সহ মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করলেও ইয়াবার আগ্রাসন কমছেনা দিনে দিনে তরুণ ও যুব সমাজ ইয়াবা আসক্ত হয়ে পড়েছেন। গত ২ মাসে ইয়াবা সহ কয়েকজনকে র্যাব ও পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে কানাইঘাটে ইয়াবা আসছে মূলত সীমান্তবর্তী দনা ও সুরাইঘাট এলাকা দিয়ে। ভারত থেকে সহজে ইয়াবা নিয়ে আসছে মাদক চোরাকরাবারীরা। এছাড়া কানাইঘাট উপজেলার পার্শ্ববর্তী জকিগঞ্জ উপজেলা থেকে কানাইঘাটের সড়কের বাজার দিয়ে ইয়াবার বড় বড় চালান ঢুকে থাকে। বেশিরভাগ ইয়াবা কানাইঘাট থেকে সিলেট শহর সহ বিভিন্ন উপজেলায় পাঠানো হয়। ছোট যানবাহন করে ভাসমান অবস্থায় পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে উপজেলার বাজার কেন্দ্রিক বিভিন্ন স্পট ও গ্রাম এলাকায় ফেরি করে ইয়াবা বিক্রি করে থাকে ছদ্মবেশিরা। তারা ইয়াবা আসক্তদের কাছে ফোনের মাধ্যমে আদান-প্রদান করে ইয়াবা বিক্রি করে থাকে। আবার নির্দিষ্ট জায়গায় ইয়াবা পৌঁছে দেয় তারা। অনেক নারীও ইয়াবা সেবন করে থাকেন এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। যার কারণে বোতলজাত মাদক, ফেনসিডিল বিক্রি কানাইঘাটে কমলেও ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রি বাড়ছে। ইয়াবার আগ্রাসন প্রতিরোধ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান আরো জোরদারের উপর গুরত্ব দিয়েছেন সবাই। পাশাপাশি জনপ্রতিনিধি, রাজনৌতিক মহল ও সামাজিক সংগঠন গুলোকে জনসচেতন মূলক কার্যক্রামের উপর জোর দেওয়ার জন্য সচেতন মহল জানিয়েছেন। তা না হলে ইয়াবার আগ্রাসনে তরুণ ও যুবসমাজ দিন দিন বিপদগামী হয়ে পড়বে যা একসময় তা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না বলে অনেকে অভিমত ব্যক্ত করেছেন।