কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রস্তাবিত বাজেটে ১৫ শতাংশ হারে আয়কর আরোপ করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টিরা। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংগঠন বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সমিতি বলেছে, ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইনে চলে বেসরকারি মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। অপরদিকে ১৮৮১ সালের ট্রাস্ট আইনে পরিচালিত হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। তাছাড়া ২০১০ সালের আইন অনুযায়ী এসব প্রতিষ্ঠান অলাভজনক, যা করযোগ্য নয়। তাই উল্লিøখিত কলেজের সঙ্গে সমভাবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর আয়কর আরোপের প্রস্তাবনা আইনের পরিপন্থী। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই প্রস্তাব রাখায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ব্যাপক উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করেছে।
সমিতির চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, শিক্ষা খাতকে অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় সরকার এ খাতে প্রাথমিক পর্যায় থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা তথা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সব স্তরে বিপুল অংকের ভর্তুকি ও অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকে। বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জাতীয় বাজেট থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে নামমাত্র খরচে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ার সুযোগ পায়। অন্যদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কোনো প্রকার সরকারি বরাদ্দ কিংবা অনুদান না পাওয়ায় কারণে এসব বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি’র ওপর নির্ভর করতে হয়। একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র হিসেবে সরকার যেখানে মেধা সৃষ্টির লক্ষ্যে সর্বস্তরের শিক্ষা খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ভর্তুকি দিয়ে থাকে, সেখানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর করারোপ করা হলে উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে তা ব্যাপক বৈষম্য সৃষ্টি করবে।
এতে বলা হয়, কর আরোপ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আর্থিক সংকটে পড়বে। সেইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ব্যয় বৃদ্ধির কারণে উচ্চশিক্ষা অর্জন বাধাগ্রস্ত হবে। শিক্ষিত জাতি গঠনের মাধ্যমে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প ২০৪১ অর্জনের লক্ষ্য ব্যাহত হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, করোনা দুর্যোগে অর্থ সংকটে পতিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই করছে। শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, ক্যাম্পাস ভাড়া পরিশোধ করা অনেক ক্ষেত্রেই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একমাত্র অর্থপ্রাপ্তির উৎস শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি নিয়মিত পাওয়া যাচ্ছে না। এইচএসসি পরীক্ষা সময়মতো না হওয়ায় শিক্ষার্থী সংকটও দেখা দিয়েছে। অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের বৃত্তি ও টিউশন ফির ওপর ছাড় দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে।
এমন সংকটকালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর কর আরোপ করা হলে অনুমোদিত নতুনসহ অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে উল্লেখ করেছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মালিকদের এই সংগঠন।