কাজিরবাজার ডেস্ক :
আসন্ন বাজেট অধিবেশন উপলক্ষে তিন দিন পরপর এমপি-মন্ত্রীদের করোনা টেস্ট করাতে হবে। দেশে করোনার ভারতীয় ধরন শনাক্ত হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় সংসদ। যেসব এমপি মন্ত্রীকে সংসদে যেতে হবে তাদের এই টেস্টের ফলাফল দেখিয়ে সংসদ ভবনে প্রবেশ করতে হবে।
রবিবার (২৩ মে) সংসদ ভবনের শপথ কক্ষে একাদশ জাতীয় সংসদের ১৩তম এবং বাজেট অধিবেশন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সংসদের সিনিয়র সচিব জাফর আহমেদ খান বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
এ বিষয়ে সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, ‘সবার সুস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সংসদের ক্লিনিক ও মিডিয়া সেন্টারে বরাবরের মতোই করোনা পরীক্ষা করা যাবে।’
আগামী ২ জুন (বুধবার) জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু হচ্ছে। এদিন বিকেল ৫টায় অধিবেশন শুরু হবে।
বৈঠকের একাধিক সূত্র জানায়, ৩ জুন (বৃহস্পতিবার) আগামী অর্থবছরের বাজেট পেশ হবে। বাজেট পেশের আগে ওইদিন দুপুর ১২টায় সংসদে মন্ত্রী সভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। মন্ত্রী সভার পর অর্থ বিলে স্বাক্ষর করবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এ কারণে রাষ্ট্রপতি সেদিন তার সংসদ ভবন কার্যালয়ে অবস্থান করবেন। এরপর ৩টায় অধিবেশন শুরু হবে। অধিবেশন চলবে ১২ কার্যদিবস।
এছাড়া বৈঠকে সংসদ ভবন, সদস্য ভবনসমূহ এবং সংসদ এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা, সংসদ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ, পানি সরবরাহ, লিফট, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সচল রাখা, সংসদ এলাকার সৌন্দর্য বাড়ানো বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে জুম প্লাটফর্মে ভার্চুয়ালিও অংশ নেয়ার সুযোগ ছিল। অনেকে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়েছেন।
জানা যায়, এটি বর্তমান অর্থমন্ত্রীর তৃতীয় বাজেট পেশ। আর আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ১৩তম বাজেট। এই বাজেট অধিবেশন সংশ্লিষ্ট সব এমপি-মন্ত্রী ছাড়াও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনা টেস্ট করা হবে। তুলনামূলক তরুণ এমপিদের সংসদে উপস্থিত হওয়ার জন্য উৎসাহ দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর সংস্পর্শে যেতে লাগবে করোনার নেগেটিভ রিপোর্ট। সর্বনিম্ন সংখ্যক ব্যক্তিবর্গ নিয়ে অধিবেশনের কাজ পরিচালনা করা হবে। সংসদ চলাকালীন দর্শনার্থী প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। তথ্য-প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা হবে।
এবার প্রায় ৬ লাখ কোটি টাকার বাজেট দেয়া হবে। এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের মতো আসন্ন অর্থবছরের বাজেটেও স্বাস্থ্যখাতকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এবং স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে এ বিভাগে ২৯ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে, যা গত অর্থবছরের তুলনায় তিন হাজার কোটি টাকার মতো বেশি। তবে ভ্যাকসিনসহ সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় আগামী বাজেটে বরাদ্দ বাড়ছে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। এই হিসাবে বরাদ্দের হবে পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
এর মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জন্য বরাদ্দ থাকবে প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি বাজেটে রয়েছে ২২ হাজার ৯৫৩ কোটি টাকা। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগকে দেয়া হবে প্রায় নয় হাজার কোটি টাকা, যা চলতি বাজেটে রয়েছে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা।