নিম্নচাপে পরিণত হচ্ছে ‘ইয়াস’, জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা

9

কাজিরবাজার ডেস্ক :
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি এখন সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। গত রাতে বা আজ সোমবার সকালে এটি নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। বর্তমানে সুস্পষ্ট লঘুচাপটির ৪০ কিলোমিটারে বাতাসের এক টানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ এর কারণে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কাও রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস জানান, রবিবার রাতে এটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এরপর সেটির গতিপথ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।
নিম্নচাপ সৃষ্টির পর মঙ্গল ও বুধবার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান এই আবহাওয়াবিদ।
এদিকে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বুধবার নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে ভারতের উডিষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের খুলনা, সুন্দরবন উপকূলের দিকে এগিয়ে আসতে পারে।
আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সুস্পষ্ট লঘুচাপটি এখন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
রবিবার দুপুর ১২টায় এটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭১০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।
এটি আরও ঘণীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপ এবং পরবর্তী সময়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার। যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
নিম্নচাপ কেন্দ্রের কাছে সাগর উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এ দিকে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়কে কেন্দ্র করে সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। গতকাল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়টি আমলে নিয়ে এবার তিন গুণ বেশি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি সবার জন্য মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা হবে বলেও জানিয়েছে দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রস্তুতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০০টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রের উদ্বোধন করে রবিবার বলেছেন, ‘আরেকটি ঘূর্ণিঝড় কিন্তু আসছে। সেটা কেবল তৈরি হচ্ছে, কতটুকু যাবে….এখন আধুনিক প্রযুক্তির কারণে আমরা অনেক আগে থেকেই জানতে পারি। আর সেই বিষয়ে পূর্ব সতর্কতা আমরা নিতে শুরু করেছি।’