কাজিরবাজার ডেস্ক :
লকডাউনের (বিধি-নিষেধ) মেয়াদ আরও ৭ দিন বাড়িয়েছে সরকার। আজ ১৭ থেকে ২৩ মে বিধিনিষেধ আরোপ থাকবে। এ লক্ষ্যে রবিবার মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে হোটেল রেস্তরোঁর নতুন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এদিকে করোনা সংক্রমণের কারণে দেশের সব ধরনের সরকারী-বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেনের ছুটিও আগামী ২৯ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। একই সঙ্গে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ও ২৯ মে পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
করোনা সংক্রমণ রোধে মানুষের চলাচল ও সার্বিক কার্যক্রমে বিধিনিষেধ তথা ‘লকডাউন’র প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। এই বিধিনিষেধ চলাকালে লঞ্চ, ট্রেন ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জেলার ভেতরে বাস চলবে। দোকানপাট সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কোভিড-১৯ সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় আগের সব বিধিনিষেধ ও কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় এ বিধিনিষেধ ১৬ মে মধ্যরাত থেকে ২৩ মে মধ্যরাত পর্যন্ত বর্ধিত করা হলো। প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, এ সময়ে সরকারের রাজস্ব আদায়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত সব দফতর/সংস্থাসমূহ জরুরী পরিষেবার আওতাভুক্ত হবে। খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্তরাঁসমূহ কেবল খাদ্য বিক্রি/সরবরাহ করতে পারবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্তরোঁসমূহ কেবল খাদ্য বিক্রি/সরবরাহ করতে পারবে। এর আগে গত ৫ এপ্রিল থেকে সাতদিনের লকডাউন ঘোষণার প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, এই সময়ে হোটেল-রেস্তরোঁ খোলা থাকবে, পার্সেল করতে পারবে। তবে হোটেল-রেস্তরোঁয় বসে খাওয়া যাবে না।
কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে গত ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে আটদিনের কঠোর লকডাউন শুরু হয়। লকডাউনের মধ্যে পালনের জন্য ১৩টি নির্দেশনা দেয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। পরে তিন দফা লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হয়, নির্দেশনায় আসে সংশোধন। লকডাউনের সর্বশেষ মেয়াদ শেষ হয় রবিবার মধ্যরাতে। চলতি বছর করোনা সংক্রমণ বাড়ায় গত ৫ এপ্রিল থেকে ‘লকডাউন’ ঘোষণা করা হয়। ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত ঢিলেঢালা ‘লকডাউন’ হলেও সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ায় ১৪ এপ্রিল থেকে ‘কঠোর লকডাউন’ ঘোষণা করে সরকার। সর্বশেষ তা ১৬ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
প্রথামিক বিদ্যালয় বন্ধ ২৯ মে পর্যন্ত ॥ করোনা সংক্রমণের কারণে দেশের সব ধরনের সরকারী-বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেনের ছুটিও আগামী ২৯ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্য আগামী ২৯ মে পর্যন্ত সব ধরনের সরকারী/ বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেনের চলমান ছুটি বাড়ানো হয়েছে। এ সময়ে নিজেদের ও অন্যদের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষার লক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বাসস্থানে অবস্থান করবে। পাশাপাশি অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
প্রাধনমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সময়ে সময়ে জারি করা নির্দেশনা ও অনুশাসন শিক্ষার্থীদের মেনে চলতে হবে।
করোনা সংক্রমণ কমে আসায় ৩০ মার্চ স্কুল-কলেজ এবং ২৪ মে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। পরে স্কুল-কলেজের ছুটি ২২ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ও এই মুহূর্তে খোলা হচ্ছে না। আগে যেহেতু স্কুল-কলেজ খোলার কথা ছিল সেজন্য স্কুল-কলেজের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হলো। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হবে। গত বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণের পর ১৮ মার্চ থেকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এই সময়ে অনলাইনে এবং সংসদ টিভিতে শ্রেণী কার্যক্রম চালু রাখে সরকার।
বন্ধ থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়ও ॥ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় আগামী ২৯ মে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। রবিবার (১৬ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে ছুটির সময় অনলাইন ক্লাস অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর আগে শনিবার (১৫ মে) রাতে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগামী ২৯ মে পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়।