তাহিরপুরে গ্রাম পুলিশ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন, ২ জন গ্রেফতার

9
তাহিরপুরে গ্রাম পুলিশ হত্যার মূল হোতা সহ আটক দুইজন।

স্টাফ রিপোর্টার :
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে সংঘটিত একটি ক্লুলেস হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র‌্যাব)-৯’র সদস্যরা। ওই হত্যাকান্ডে দায়েরকৃত মামলার মূল আসামিসহ ২ জনকে গ্রেফতারও করেছে র‌্যাব।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় গ্রাম পুলিশ আব্দুর রউফ হত্যা মামলায় গত শুক্রবার বিকেলে র‌্যাবের অভিযানে চাঞ্চল্যকর আব্দুর রউফ হত্যা মামলার প্রধান আসামিসহ ২জনকে গ্রেফতার কর হয়।
গতকাল শনিবার র‌্যারে প্রেসবিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার ৬ মে তাহিরপুর উপজেলায় দুর্বৃত্তদের ছুরির আঘাতে আব্দুর রউফ নামক ব্যক্তি মারা যান। সেই ক্লুলেস হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য ছায়া তদন্ত শুরু করে র‌্যাব-৯। পরবর্তীতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাবের একটি দল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাহিরপুরে অভিযান চালিয়ে উপজেলার হলহলিয়া চরগাঁও-এর আব্দুর রউফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি আব্দুল হেকিম (৩০) ও আরেক সন্দেভাজন আসামি এলামুল হক শাবনুর (২৫)-কে গ্রেফতার করে।
আব্দুল হেকিম সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার হলহলিয়া চরগাঁও-এর মলাই মিয়ার পুত্র ও এলামুল হক শাবনুর তাহিরপুরের বোরখড়া গ্রামের হাফিজ উদ্দিনের পুত্র।
র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, আব্দুর রউফ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের আরেক সহযোগী সোহেল মিয়া (২৮)। সোহেল হলহলিয়া চরগাঁও-এর আকবর আলীর পুত্র। সে বর্তমানে পলাতক রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে আব্দুল হেকিম, এলামুল হক শাবনুর ও সোহেল মিয়া এই ৩ জন মিলে এ হত্যাকান্ড ঘটান।
গ্রেফতারকৃত আসামিরা জানান, গত বুধবার ৫ মে রাত সাড়ে ৯ টা থেকে সাড়ে ১০ পর্যন্ত নিকটবর্তী হাওরের খোলা জায়গায় বসে আড্ডা দেয় তারা ৩ জন। পরে রাত প্রায় ২টার দিকে এ ৩ জন ব্যক্তি গ্রেফতারকৃত শাবনুরের দাদার (সফদর আলীর) খলা হতে ধান চুরি করে নিজের ঘরে রাখে। পরে রাত পৌনে ৩টার দিকে শাবনুর তার ২ সহযোগিকে বাড়িতে এগিয়ে দিতে রওয়ানা হয়। তখন ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে তারা শাবনুরের বাংলো ঘরের বারান্দায় কিছুক্ষণ অবস্থান করে। সে সময় সোহেল মিয়া তাদের বলে- তার একটি সৌরবিদ্যুতের ব্যাটারি দরকার। তখন আবদুল হেকিম বলে- গ্রাম পুলিশ (নিহত হওয়া) আব্দুর রউফের ঘরে একটি ব্যাটারি আছে। পরে রাত অনুমান সাড়ে ৩টার দিকে তারা ৩ জন আব্দুর রউফের ঘরে ব্যাটারি চুরি করার জন্য প্রবেশ করে। আব্দুল হেকিম ব্যাটারি নিয়ে যাওয়ার সময় আব্দুর রউফ সজাগ হয়ে পড়েন। এসময় রউফ চিৎকার করে চোরদের ঝাপটে ধরতে চাইলে আব্দুল হেকিম তার হাতে থাকা টিপ চাকু রউফের বুকে বিদ্ধ করে। এসময় আবদুর রউফ মাটিতে লুটে পড়েন। তখন বাড়ির আরও লোকজন জেগে গেলে তারা ৩ জন ব্যাটারি নিয়ে পালিয়ে যান। পরদিন সকালে থানা পুলিশ আব্দুর রউফের লাশ উদ্ধার করে। পলাতক সোহেল মিয়াকে গ্রেফতার করার জন্য র‌্যাবের গোয়েন্দা দল তৎপর রয়েছে এবং গ্রেফতারকৃতদের তাহিরপুর থানায় হস্তান্তর করেছে র‌্যাব।