সামনে ঈদুল ফিতর। আনন্দ নেই শ্রমজীবী কাজহারা দুস্থ মানুষের মনে। পবিত্র মাস রমজানে সেহরি ও ইফতারে ভালমন্দ খাবার জোটানোও কঠিন হয়ে পড়েছে। এসব হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মতো সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগ এবার কমই দেখা যাচ্ছে। ব্যক্তিপর্যায়ে মানুষও অতখানি দাঁড়াচ্ছে না মানুষের পাশে। করোনার নতুন ঢেউয়ে আক্রান্ত হয়েছে অর্থনীতি। তবু আশাবাদ থেমে নেই। ফিতরা ও জাকাতের মাধ্যমে সহায়তা পাবে দরিদ্র মানুষেরা। জনকল্যাণমুখী সরকার গত রোজার ঈদের মতো এবারও বিশেষ সহায়তার উদ্যোগ নিয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারীর দ্বিতীয় তরঙ্গে দেশের ক্ষতিগ্রস্তদের এই দুঃসময়ে জীবন ও জীবিকা নির্বাহের জন্য মানবিক সহায়তা নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত ৩৬ লাখের বেশি পরিবারকে পরিবারপ্রতি আড়াই হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। এই বিশেষ মানবিক উদ্যোগ ঈদের আগে একটু হলেও হাসি ফোটাবে ভুক্তভোগীদের মুখে।
জনকল্যাণমূলক সরকারের লক্ষ্যই হচ্ছে দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সার্বিক সহায়তা দান। দেশে প্রথম করোনারোগী শনাক্তের পর থেকে মানুষ বাঁচাতে একের পর এক পরিকল্পনা গ্রহণ করে চলেছে জনতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ সরকার। এটা বললে অত্যুক্তি হবে না যে, সরকারপ্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বক্ষণিকভাবে কাজ করে চলেছেন। একের পর এক পরিকল্পনা গ্রহণ করছেন, পাশাপাশি চলছে তা বাস্তবায়নের কাজ। গত বছর ও চলতি বছর দুই ধাপে দীর্ঘসময় মানুষের চলাচল ও কর্মকান্ড সীমিত হয়ে পড়ায় অর্থনীতিও অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর এতে সবচেয়ে বেশি বিপন্ন অবস্থার মধ্যে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। যাদের জীবন হলো দিন এনে দিন খাওয়ার মতো। করোনা সঙ্কটের ভেতর কাজ বন্ধ থাকায় তাদের আয়রোজগারের পথ প্রায় বন্ধ। এমন পরিস্থিতিতে মৌলিক মানবিক প্রয়োজন কিভাবে মিটবে? তাদের জীবন বাঁচাতে, তাদের মুখে হাসি ফোটাতে একের পর এক কল্যাণমুখী পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে সরকার। এসব পদক্ষেপের মধ্যে ইতোমধ্যে প্রশংসিত হয়েছে রেশন কার্ডের মাধ্যমে দুবেলা দুমুঠো খাওয়ার ব্যবস্থা এবং গত ঈদের আগে দুই কোটি দরিদ্রের হাতে নগদ টাকা পৌঁছানো।
সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর তালিকার বাইরে এই কোটি মানুষকে নগদ অর্থ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতায় ইতোমধ্যে দেশের প্রায় এক কোটি মানুষ নগদ অর্থ সহায়তা পেয়েছেন। করোনাজনিত সঙ্কটেও একের পর এক জনকল্যাণমুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার, যার বিশেষ দৃষ্টান্ত নগদ অর্থ প্রদান। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী দৈনিক ২ ডলারের নিচে আয় করেন দেশে এমন লোক আছেন ১৫ শতাংশের মতো, সংখ্যায় যা আড়াই কোটির কাছাকাছি। এদের প্রায় সম্পূর্ণ অংশ সরকারের নগদ অর্থ সহায়তার আওতায় চলে আসা একটি যুগান্তকারী ঘটনা।