সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ॥ সেবায়েতকে বাঁচাতে যৌন হেনস্তার ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে একটি চক্র

7

স্টাফ রিপোর্টার :
গোলাপগঞ্জের কালাকোনায় স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে আসামিকে বাঁচাতে একটি চক্র অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করেছে ওই মেয়ের পরিবার। একই সাথে মামলার প্রধান আসামি পরেশ চৌহানকে গ্রেফতার করা হলেও তার সহযোগী দীপঙ্কর দেব তপন গ্রামে এসে ওই মেয়ের জীবন নষ্ট করার হুমকিও দিচ্ছে। এ কারণে স্বাভাবিক জীবন ব্যহত হওয়ার পাশাপাশি নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়েছে বলে দাবি ভুক্তভোগী পরিবারের।
বুধবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন তুলি রানী দেব। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, প্রায় দুই বছর ধরে পরেশ চৌহান ও দীপঙ্কর দেব তার স্কুল পড়ুয়া বোনকে দফায় দফায় যৌন হেনস্তার করে আসছিল। কিন্তু এই ঘটনা শুরু থেকেই তার পরিবার লজ্জার কারণে গোপনে রেখেছিলো। সর্বশেষ গত ১৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় ঘর থেকে বের হয়ে বাথরুমে যাবার সময় তারা দু’জন তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় তার চিৎকারে পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে গেলে ওই দুই ব্যক্তি পালিয়ে যায়। এরপরই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরদিন দুপুরে নির্মাণাধীন মন্দিরের সেবায়েত দাবিদার পরেশকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু এরপরই ধর্মকে পুজি করে একটি মহল সত্য বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে আসামিদের রক্ষার চেষ্টা করছেন।’
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘পরেশ চৌহান ও তপনকে রক্ষা করতে তার সহযোগী লিংকন দেবসহ কয়েকজন নিকটাত্মীয় নিজেদের ভক্ত পরিচয় দিয়ে নানা মিথ্যাচার করে গেছেন কিন্তু যেখানে মন্দির নির্মাণাধীন সেখানে ভক্ত কোথা থেকে আসে বলে প্রশ্ন রাখেন তিনি।’
তিনি দাবি করেন, ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে পরেশ চৌহান গ্রেফতার হয়েছে। এখানে জমি সংক্রান্ত কোনো বিরোধ নেই। পরেশ চৌহান তাদের এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাও নন বলে দাবি করেন তিনি। লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘কয়েক বছর আগে সিলেট শহরতলীর মেজরটিলার দেবপুর এলাকার একটি মন্দিরে থাকাকালীন সময়ে নারী কেলেঙ্কারীর ঘটনায় তাকে এলাকার মানুষ তাড়িয়ে দেন। এরপরই সে গোলাপগঞ্জের কান্দিগাওয়ের একটি মন্দিরে যায়, সেখান থেকেও একই অভিযোগে তাকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছিল বলে দাবি তার।’
তিনি বলেন, ‘কান্দিগাঁও থেকে বিতারিত হওয়ার পর পরেশ চৌহানের পরামর্শে তপন দেব গত ২০১৯ সালের আগষ্ট মাস থেকে মন্দির নির্মানকাজ শুরু করে। এবং এই নির্মানাধীন মন্দিরের দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয় পরেশ চৌহানকে। ওইখানে যে মন্দির নির্মাণ হচ্ছে সেটি ব্যক্তি মালিকানাধীন মন্দির। এইখানে এলাকার সকল সনাতনীর সম্পৃক্ততা নেই। কেউ মন্দিরের বিরোধীতাও করেননি। মন্দির নির্মাণ কাজ শুরুর পর থেকে বিভিন্ন সময়ে পরেশ তাদের বাড়িতে আসত, এ সময়ই তার বোনের দিকে কুনজর যায় বলে দাবি করেন তিনি।’
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, পুলিশ এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। তবে দীপঙ্কর দেব তপন গ্রেফতার না হওয়ার কারণে তারা এখনও আতঙ্কে আছেন। তার বোনও মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছে। ওই দিনের ঘটনার পর থেকে সে ভড়কে গেছে। তার স্বাভাবিক জীবন ব্যহত হচ্ছে, পাশাপাশি ভয়ে সে ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। তিনি প্রশাসনের কাছে ‘পলাতক’ তপনকে গ্রেফতারের দাবি করেন। পাশাপাশি এ ঘটনায় ন্যায় বিচারও চেয়েছেন।