কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার এক বছর পর করোনাকালে ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসাসেবা দেয়া ১৪ হাসপাতালের এক হাজার ৪৭৪ চিকিৎসকসহ দুই হাজার ৮৬১ জন স্বাস্থ্যকর্মী প্রণোদনা পাচ্ছেন। চিকিৎসক ছাড়া বাকিদের মধ্যে ৪০৬ জন নার্স আর ৯৮১ জন অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী।
শনিবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ১৪টি হাসপাতালের মোট এক হাজার ৪৭৪ জন চিকিৎসক, ৪০৬ জন নার্স ও ৯৮১ জন অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী এই প্রণোদনা পাবেন। টাকার অঙ্কে এই প্রণোদনার পরিমাণ ১৫ কোটি ২৭ লাখ ৬৪ হাজার ৯০২ টাকা।
গত বছর করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন চিকিৎসক-নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাদের উৎসাহ ও উদ্দীপনা যোগাতে গত বছরের ৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ প্রণোদনা দেয়ার ঘোষণা দেন। এর এক বছর পর ১৪টি হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য দুই মাসের বিশেষ প্রণোদনা বরাদ্দ দিয়েছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের বাজেট শাখা।
এর আগে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে দুই দফায় চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত মোট চার হাজার ২৩২ ব্যক্তির সম্মানী বাবদ ২৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা ছাড় করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। মোট ২৮টি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নামে এই অর্থ ছাড় করা হয়। তাদের মধ্যে চিকিৎসক এক হাজার ৮৮০ জন, নার্স ৮৪৫ জন এবং স্বাস্থ্যকর্মী এক হাজার ৫০৭ জন।
কোন হাসপাতালে কতজন পাবেন প্রণোদনা
১. শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ১৭২ জন চিকিৎসক, ৩৩৯ নার্স ও পাঁচজন স্বাস্থ্যকর্মী।
২. পিরোজপুর জেলা সদর হাসপাতালের ২০ জন চিকিৎসক, ৩৫ জন নার্স ও ছয়জন স্বাস্থ্যকর্মী।
৩. মৌলভীবাজার জেলা সদর হাসপাতালের ৫৪ চিকিৎসক ও ২৮ জন স্বাস্থ্যকর্মী।
৪. মিরপুরের মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের ৯৪ চিকিৎসক ও ৩৪ স্বাস্থ্যকর্মী।
৫. সিরাজগঞ্জের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুনন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের ৬০ জন চিকিৎসক ও ১৬ জন স্বাস্থ্যকর্মী।
৬. দিনাজপুরের আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজের ১০৮ চিকিৎসক ও ৭৪ স্বাস্থ্যকর্মী।
৭. রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৯৭ জন চিকিৎসক ও ২০৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী।
৮. কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৬ জন চিকিৎসক।
৯. বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের ১৬৫ চিকিৎসক ও ৩১০ স্বাস্থ্যকর্মী।
১০. রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৮০ জন চিকিৎসক ও ১৪১ জন স্বাস্থ্যকর্মী।
১১. সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২০৯ চিকিৎসক ও ১৩৯ জন স্বাস্থ্যকর্মী।
১২. বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের তিনজন স্বাস্থ্যকর্মী।
১৩. শহীদ শামসুদ্দিন আহমেদ হাসপাতালের ৬৬ জন চিকিৎসক, ১৩ জন স্বাস্থ্যকর্মী।
১৪. সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের ২৩ চিকিৎসক, ৩২ জন নার্স ও সাতজন স্বাস্থ্যকর্মীর নামে প্রণোদনা বরাদ্দ হয়েছে।
শনিবার পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশে মোট ১৩৯ চিকিৎসক মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ৯১০ জন।
কারা পাবেন না প্রণোদনা
জানা গেছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী এ প্রণোদনা পাবেন। তবে আউটসোর্সিং বা অন্য কোনোভাবে নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের এই প্রণোদনা দেয়া হবে না। এছাড়া প্রশাসনিক কর্মকর্তা, পরিসংখ্যান কর্মকর্তা, টেলিফোন অপারেটর, অফিস সহকারী, কম্পিউটার অপারেটর, হিসাবরক্ষক, গাড়িচালক, ইলেকট্রিশিয়ান, মুয়াজ্জিন, মেকানিক, স্টেনোটাইপিস্ট, স্টোরকিপার, মালি, অফিস সহায়করাও এই প্রণোদনা পাবেন না।