বড়লেখা থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যকর্মীর বিরুদ্ধে বুকের ব্যথার এক রোগীকে ভুল চিকিৎসায় মেরে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিক্ষানবিশ উপ-সহকারী স্বাস্থ্যকর্মী এমদাদ হোসেনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠেছে।
মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) দুপুরে এই নিয়ে হাসপাতালে চরম উত্তেজনা দেখা দিলে উপজেলা চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ ও থানার ওসি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। পরে পুলিশ ওই স্বাস্থ্যকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়।
হাসপাতাল, রোগীর স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গ্রামতলা মোল্লাবাড়ির বাসিন্দা প্রবাস ফেরত আব্দুল খালিক (৫৭) বুকের ব্যথা অনুভব করলে মঙ্গলবার দুপুরে তার ভাতিজা রেজাউল করিম তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, জরুরি বিভাগের শিক্ষানবিশ উপ-সহকারী স্বাস্থ্যকর্মী এমদাদ হোসেন (২৫) কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসারকে না জানিয়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বুকের ব্যথার এ রোগীকে ইনজেকশন পুশসহ মনগড়া চিকিৎসা দিয়ে কিছু পরীক্ষার জন্য পার্শবর্তী ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠিয়ে দেন। পরীক্ষা শেষে হাসপাতালে পৌঁছার ৪-৫ মিনিটের মধ্যে আব্দুল খালিকের মৃত্যু ঘটে।
এ ঘটনায় রোগীর স্বজনসহ স্থানীয় লোকজনের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। খবর পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ ও থানার ওসি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। পরে স্বাস্থ্যকর্মী এমদাদ হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
নিহত আব্দুল খালিকের ভাতিজা রেজাউল করিমসহ স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, জরুরি বিভাগে কোনো মেডিকেল অফিসারকে পাওয়া যায়নি। শিক্ষানবিশ স্বাস্থ্যকর্মী এমদাদ হোসেনের মনগড়া ইনজেকশন পুশ ও ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু ঘটেছে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শুভ্রাংশ শেখর দে জানান, জটিল অসুখের কোনো রোগী আসলে দায়িত্বরত উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার তাৎক্ষণিক কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসারকে কল করার নিয়ম রয়েছে। ঘটনার সময় ডা. তৌফিক আজিজ হাসপাতালে ডিউটিতে ছিলেন। কিন্তু শিক্ষানবিশ এমদাদ তাকে না জানিয়ে রোগীকে ইনজেকশন পুশ ও ঔষধ দিয়েছে। যা সে তা করতে পারে না। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।
বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার জানান, রোগীর মৃত্যুর ঘটনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাসপাতালের শিক্ষানবিশ উপ-সহকারী মেডিকেল কর্মী এমদাদ হোসেনকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।