অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্যচুক্তি করতে সম্মত বাংলাদেশ-মালদ্বীপ

11
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশে সফররত মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ দুই দেশের বৈঠক শেষে জয়েন্ট কমিশন ফর কম্প্রিহেনসিভ কোঅপারেশন গঠনে একটি এমওএইউ স্বাক্ষর করেন দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী।

কাজিরবাজার ডেস্ক :
দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্যচুক্তি করতে একমত হয়েছে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপ।
বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সফররত মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্যচুক্তি করতে সম্মত হয় দুই দেশ।
পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রেস সচিব বলেন, দুই নেতা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সার্বিক দিকগুলো পর্যালোচনা করেছেন এবং ব্যবসা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, যুব উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, ওষুধসহ বিভিন্ন সেক্টরে পারস্পরিক সহযোগিতা সম্প্রসারণে একমত হন তারা।
দুই নেতা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের সম্ভাবনার পরিপূর্ণ সদ্ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
মালদ্বীপের সঙ্গে বাংলাদেশ অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্যচুক্তিতে প্রবেশে আগ্রহ প্রকাশ করে।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট বলেন, মালদ্বীপের সম্ভাবনাময় বাণিজ্য পার্টনার বাংলাদেশ।
নিকট ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে অগ্রাাধিকারমূলক বাণিজ্যচুক্তি (পিটিএ) সই হবে বলে আশা প্রকাশ করেন ইব্রাহিম সলিহ।
গভীর সমুদ্র থেকে টুনা মাছ আহরণে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে মালদ্বীপ।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট বলেন, পর্যটনসহ বিভিন্ন সেক্টরে বিনিয়োগে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে দুই দেশের।
উভয় দেশ শুল্ক সহযোগিতা সংক্রান্ত প্রস্তাবিত চুক্তি চূড়ান্ত করতে এবং দ্বিগুণ কর এড়ানোর বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর ত্বরান্বিত করতে সম্মত হয়।
একটি নৌপরিবহন চুক্তির মাধ্যমে মালে এবং বাংলাদেশের মধ্যে সরাসরি নৌ যোগাযোগ স্থাপন এবং বাংলাদেশের তিনটি সমুদ্রবন্দর ব্যবহার বিষয়ে সম্মত হন দুই নেতা।
মালদ্বীপে বিভিন্ন ক্ষেত্রে মানবসম্পদ উন্নয়নে বাংলাদেশের নীতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
মালদ্বীপের শান্তিরক্ষীদের জন্য বাংলাদেশের ইনস্টিটিউট অব পিস সাপোর্ট অপারেশন ট্রেনিংয়ে (বিআইপিএসওটি) প্রশিক্ষণ কোর্স গ্রহণের প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ।
মালদ্বীপে বসবাসরত সব বাংলাদেশিকে বিনামূল্যে করোনা টিকা দেওয়া হবে বলে জানান দেশটির প্রেসিডেন্ট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মালদ্বীপের এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং ধন্যবাদ জানান।
দুই দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখার জন্য মালদ্বীপে প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকদের প্রশংসা করেন সফররত দেশটির প্রেসিডেন্ট।
মালদ্বীপে চিকিৎসা বিষয়ক পেশাদারদের ঘাটতি মেটাতে বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ করার প্রস্তাব দেন রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম সলিহ।
জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে জাতিসংঘ, ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে একমত হন দুই নেতা।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সলিহ বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বাংলাদেশের সঙ্গে মালদ্বীপ যৌথভাবে কাজ করবে।
দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
মালদ্বীপের প্রতিনিধিদলে ছিলেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ শহিদ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন মন্ত্রী ফাইয়াজ ইসমাইল, পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক সচিব সাবরা ইব্রাহিম নুরদিন এবং পররাষ্ট্র সচিব আবদুল গফুর মোহামেদ।