শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্ব

9

দেখতে দেখতে দেশে অতিক্রান্ত হলো করোনাভাইরাস মহামারীর এক বছর। উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম বাংলাদেশে শনাক্ত হয় করোনা রোগী, যারা ছিলেন বিদেশ প্রত্যাগত। ২০১৯ সালের চীনের উহানে প্রথম সংক্রমণ ঘটে করোনাভাইরাসের। যা এক কথায় ভয়ঙ্কর সংক্রামক ও হন্তারক ব্যাধি হিসেবে অচিরেই আবির্ভূত হয় এবং ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বব্যাপী। পরে এর নামকরণ হয় কোভিড-১৯। সবচেয়ে যা বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপূর্ণ তা হলো, এর বিরুদ্ধে প্রচলিত কোন ওষুধ তথা এ্যান্টিবায়োটিক কার্যকর ছিল না। ফলে চীন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশসহ প্রায় বিশ্বব্যাপী দলে দলে মানুষ সংক্রমিত ও মৃত্যুমুখে পতিত হতে থাকে অসহায়ভাবে। সত্যি বলতে কি, করোনা সংক্রমণ গোটা বিশ্বের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে প্রায় অকার্যকর প্রমাণিত করে। ফলে সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাভস পরাসহ সাবান বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়া এবং সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা প্রধান অবলম্বন হয়ে দাঁড়ায়। দেশে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল বন্ধসহ ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রফতানি স্থগিত হয়ে যায়। করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে দেশে দেশে শুরু হয় শাটডাউন-লকডাউন। ফলে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিতে দেখা দেয় প্রায় অচলাবস্থা এবং বিশ্ব নিপতিত হয় ভয়াবহ মন্দার মুখে, যার জের চলবে আরও বহুদিন। বাংলাদেশে পর্যন্ত একটানা ৬৬ দিন লকডাউন চলে। স্কুল-কলেজ-শিক্ষাঙ্গন এখনও বন্ধ। তবে এ কথা স্বীকার করতেই হবে যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সময়োচিত যথাযথ হস্তক্ষেপ, দূরদর্শী নীতির কারণে দেশে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুহার বরাবরই থেকেছে নিয়ন্ত্রণে। বোরো-আমনের বাম্পার ফলন হওয়ায় অনেকের আয়-উপার্জন কমে গেলেও না খেয়ে থাকেনি কেউ। বিশাল অঙ্কের অর্থ প্রণোদনা দেয়ায় পোশাক খাতসহ কলকারখানার চাকা সচল থেকেছে। সর্বোপরি বেড়েছে রেমিটেন্স। সর্বাধিক যা উল্লেখ্য, ও গর্বের তা হলো বাংলাদেশ বিশ্বের সেই বিরল তিন-চারটি দেশের একটি যারা করোনা ভ্যাকসিন বিদেশ থেকে ক্রয় করে জাতিকে উপহার দিতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে দেশজুড়ে চলছে সেই সুবিশাল কর্মযজ্ঞ। তবু উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, গত কয়েকদিন ধরে আবার করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যুহার বাড়ছে। সুতরাং টিকা নেয়ার পাশাপাশি সবাইকে হতে হবে স্বাস্থ্য সচেতন। প্রধানমন্ত্রীও এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
জনকল্যাণমুখী জনবান্ধব সরকার তার কথা রেখেছে। করোনা মহামারী তথা কোভিড-১৯ দেশে সংক্রমণের মাত্র ১১ মাসের মাথায় ৭ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে শুরু হয়েছে টিকাদান কর্মসূচী। এর মধ্য দিয়ে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। একই সঙ্গে টিকার মাধ্যমে করোনা মহামারী মোকাবেলার বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় যুক্ত হলো বাংলাদেশ। এখন প্রয়োজন সবার জন্য বিনামূল্যে ভ্যাকসিন প্রাপ্তি নিশ্চিত করা, যেটি সরকার করতে বদ্ধপরিকর। দেশের অধিকাংশ মানুষ টিকা নিলেই করোনা প্রতিরোধ গড়ে উঠবে হার্ড ইমিউনিটি তথা সর্বাত্মক সুরক্ষা। এর পাশাপাশি সবাইকে মেনে চলতে হবে স্বাস্থ্যবিধি।