কমলগঞ্জে দু’পক্ষের সংঘর্ষে সিএনজি অটোরিক্সার চালক নিহত

16

পিন্টু দেবনাথ কমলগঞ্জ থেকে :
তুচ্ছ এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে প্রাণ গেল এক সিএনজি চালকের। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন একজন। ঘটনাটি ঘটেছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগরের বড়চেগ সিএনজি ফিলিং ষ্টেশনে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১১ ঘটিকার দিকে কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া শফি প্রাইভেট কার নিয়ে শমশেরনগর সিএনজি ফিলিং স্টেশনে গ্যাস নিতে যান। সেখানে সিএনজি চালক জলিল মিয়া (২৭) গ্যাস নিতে এসে বড় গাড়ীর লাইনে ঢুকে পড়ে। এনিয়ে প্রাইভেটকার চালক হামিদের সাথে সিএনজি চালক জলিলের কথাকাটি হয়। এরই এক পর্যায়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে আলীনগর বস্তী এলাকার মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস মিয়া ওরপে লাল মিয়ার ছেলে সিএনজি চালক জলিল মিয়া (২৭) এর বুকে ও পিঠে কে বা কারা ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে। আশংকাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হয়ে মৌলভীবাজাার সদর হাসপাতালে এবং সেখান থেকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করা হলে রাতেই পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়। এসময় ছুরিকাঘাতে মাইক্রোবাস চালক মনির মিয়াও (৩৬) আহত হন। তাকেও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। নিহতের ভাই কাসেম মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এদিকে সিএনজি চালক জলিল মিয়া ছুরিকাঘাতে নিহতের প্রতিবাদে সুষ্ঠুু তদন্ত ও বিচারের দাবীতে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আসামীদের খোঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে শ্রীমঙ্গল-শমশেরনগর বড়চেগ সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সামনে ও আলীনগর বাজারে সড়ক দুপুর ১২ ঘটিকা পর্যন্ত সিএনজি চালকসহ স্থানীয় এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ করে রাখে। খবর পেয়ে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং সিএনজি চালক ও এলাকাবাসিকে বলেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্তক্রমে আসামিদের গ্রেফতার করার আশ^াস প্রদান করলে সড়ক অবরোধ তুলে নেয়। অবরোধের কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
নিহত সিএনজি চালক জলিল মিয়ার বড় ভাই কাসেম মিয়া জানান, বৃহস্পতিবার রাতে সিএনজি ফিলিং স্টেশনে আগে গ্যাস ফিলিং করতে কারের লাইনে চলে যায় তার ভাই সিএনজি চালক জলিল মিয়া। এ নিয়ে গ্যাস ভরতে আসা কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া শফির একটি কারের চালক ও কার মালিকের সাথে সিএনজি অটো চালক জলিলের তর্কবিতর্ক শুরু হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মাঝে হাতাহাতি শুরু হয়। এ সময় কার চালক ফোন করে কমলগঞ্জ থেকে একদল যুবককে ঢেকে আনেন। আগত যুবকরা এসেই সিএনজি চালক জলিলের উপর উপর্যুপরিভাবে বুকে ছুরিকাঘাত করে। এসময় সিএনজিতে থাকা ভাইকে বাঁচাতে আসলে আমাকেও মারধর করা হয়।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. সাজেদুল কবির বলেন, সিএনজি চালকের দেহে অসংখ্য ছুরিকাঘাত ছিল। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় দ্রুত সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল।
আলীনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজলুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, যে ঘটনাটি ঘটেছে তা খুবই দুঃখজনক। এটি একেবারে ফিল্মী কায়দায় একদল যুবককে ডেকে এনে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাত করা হলো। তিনি তদন্তক্রমে দ্রুত আসামীদের গ্রেফতার করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়ারদৌস হাসান জানান, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। সিলেটে নিহত সিএনজি চালকের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হচ্ছে। পুলিশ ঘাতকদের খোঁজে বের করতে অভিযানে আছে। প্রক্রিয়াধীন এবং তদন্তপূর্বক দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।