কাজিরবাজার ডেস্ক :
স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশপত্র প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শনিবার বিকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতিসংঘের সুপারিশপত্র প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভলপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় মূল্যায়ন শেষে বাংলাদেশেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের ঘোষণা দেয়া হয়। সুখবরটি দেশবাসীকে জানাতে শনিবার বিকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে গণভবন প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়েছেন। সেখানে অর্থমন্ত্রী ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা, আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ, বিশিষ্টজন ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস। তার সূচনার পরই প্রধানমন্ত্রীর হাতে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশপত্র তুলে দেন অর্থমন্ত্রী।
সুপারিশপত্র গ্রহণের পর কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এক যুগ আগের বাংলাদেশ আর আজকের বাংলাদেশ এক নয়।
১৯৭৫ সাল থেকে স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে থাকা বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে ২০১৮ সালে সিডিপির সব শর্ত পূরণ করে। জাতিসংঘের নিয়মানুযায়ী, কোন দেশ পরপর দুটি ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনায় উত্তরণের মানদণ্ড পূরণে সক্ষম হলে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ পায়।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি বা ইউএন-সিডিপির ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভা গত ২২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়েছে। সেখানে দ্বিতীয় দফা পর্যালোচনা শেষে শুক্রবার গভীর রাতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
সিডিপি তিনটি সূচকের ভিত্তিতে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের বিষয়টি পর্যালোচনা করে। তিনটি সূচকেই বাংলাদেশ শর্ত পূরণ করে অনেক এগিয়ে গেছে।
উন্নয়নশীল দেশ হতে একটি দেশের মাথাপিছু আয় হতে হয় কমপক্ষে ১২৩০ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশ ২০২০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ১৮২৭ ডলার। মানবসম্পদ সূচকে উন্নয়নশীল দেশ হতে ৬৬ পয়েন্টের প্রয়োজন; বাংলাদেশের পয়েন্ট এখন ৭৫.৩।
সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পূর্ণ যোগ্যতা অর্জন করেছে। আগামী ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশ বের হয়ে আসবে। এর কৃতিত্ব দেশের জনগণের। সংবাদ সম্মেলনে উন্নয়নশীল দেশের অর্জন নতুন প্রজন্মকে উৎসর্গ করেন সরকারপ্রধান।