কাজিরবাজার ডেস্ক :
বিএনপি আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষণা করায় ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সারা দেশে আওয়ামী লীগের জেলা উপজেলা পর্যায়ে কর্মসূচী নেওয়ার জন্য দলটির কেন্দ্র থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সরকারবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে বিভাগীয় শহরসহ সারা দেশে বিক্ষোভ-সমাবেশের কর্মসূচী ঘোষণা করেছে। ফেব্রুয়ারি এবং মার্চে এসব কর্মসূচী পালন করবে বিএনপি। এরই প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগও সাংগঠনিক কর্মসূচী নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঠে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিএনপিকে রাজনৈতিক মাঠ দখলের সুযোগ দেবে না আওয়ামী লীগ। আন্দোলনের কর্মসূচী দিয়ে বিএনপি যাতে ফাঁকা মাঠ দখল করতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে আওয়ামী লীগ। এ কারণেই সাংগঠনিক কর্মসূচী নিয়ে আওয়ামী লীগও দলের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি এক প্রেস বিফ্রিংয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজপথ থেকে উঠে আসা জনগণের সংগঠন আওয়ামী লীগকে আন্দোলনের ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। বিএনপির কোনো অপকর্ম বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দেওয়া হবে না। বিএনপি অহেতুক রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে। তাদের কর্মসূচি মানেই সন্ত্রাস ও সহিংসতা ছড়ানো। জনমানুষের সমর্থন আদায়ে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন আবার সহিংস হয়ে ওঠার অপচেষ্টা করছে। কিন্তু জনগণ সচেতন রয়েছে। কর্মসূচিতে সহিংসতার উপাদান যুক্ত হলে তা কঠোর হাতে দমন করা হবে।
ওবায়দুল কাদের আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে সভা- সমাবেশ, প্রতিনিধি সভা ও গণসংযোগ কর্মসূচী পালন করার আহবান জানান। এসব কর্মসূচী পালনে দলের সঙ্গে সংগতি রেখে সহযোগী সংগঠনগুলোকেও ঘোষিত কর্মসূচী পালনের আহবান জানিয়েছেন তিনি।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের ওই নেতারা আরও জানান, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে সাংগঠনিক কর্মসূচী স্থগিত রাখা হয়েছিলো। মাঝে মধ্যে সীমিত পরিসরে কিছু কর্মসূচি পালন করা হয়। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে। ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি চলছে। সামনে মার্চ মাস স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী। মার্চ মাসে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন। এরই মধ্যে বিএনপিও আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে।
সাংগঠনিক কর্মসূচির পাশাপাশি আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন এবং ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করা হবে। এ লক্ষ্যে সারা দেশে আওয়ামী লীগের জেলা উপজেলা কমিটি ও দলের সহযোগী সংগঠনগুলোকে কর্মসূচি গ্রহণ ও প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, যেহেতু করোনা সংক্রমণ কমে এসেছে তাই আমরা রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। করোনার কারণে বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কর্মসূচিতে আমরা পিছিয়ে ছিলাম। বর্তমানে এ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সমাবেশগুলো করা হবে। পাশাপাশি সংগঠনিক কর্মসূচিগুলোও নেওয়া হবে। তাছাড়া স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষেও বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হবে। এ মাস থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে আমাদের কর্মসূচি বাড়নো হবে।
বিএনপির আন্দোলনের ঘোষণা সম্পর্কে জানতে চাইলে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল, নিজস্ব কর্মসূচি নিয়ে অগ্রসর হবে। বিএনপির আন্দোলনের ডাক তো ফাসুনে পরিণত হয়। তবে তারা যদি বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করে তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী ও জনগণই তা প্রতিহত করবে।