কাজিরবাজার ডেস্ক :
সপ্তাহখানেক আগে মিয়ানমারে শীর্ষ নেতাদের আটক করে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। ফলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাস্তবায়ন নিয়ে দেখা দিয়েছে নতুন শঙ্কা। তবে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং অভ্যুত্থানের পরে টেলিভিশনে দেওয়া প্রথম ভাষণে নিয়ম মেনেই রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
সোমবার সিনিয়র জেনারেল হ্লাইং বলেন, তাদের জান্তা সরকার মিয়ানমারের চলমান পররাষ্ট্রনীতিতে কোনো পরিবর্তন আনবে না।
বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি অনুসারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনেও সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। যদিও বক্তব্যে একবারও রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ করেননি মিয়ানমারের সেনাপ্রধান।
তিনি বলেন, আমরা দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুসারে বাংলাদেশ থেকে গৃহহীনদের ফেরত নেওয়া অব্যাহত রাখব।
ভাষণে রোহিঙ্গা পুনর্বাসন ইস্যুতে তিনি বলেন, মিয়ানমারের ভেতরে অস্থায়ী শিবিরগুলোতে যত বাস্তুচ্যুত লোকজন রয়েছে, তাদের পুনর্বাসন কার্যক্রমও অব্যাহত থাকবে।
মিয়ানমার সেনাপ্রধান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে হওয়া চুক্তি বাস্তবায়ন করা হবে। এক্ষেত্রে অবশ্য একটি শর্ত দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘চুক্তি বাস্তবায়ন হবে, যদি তা দেশের স্বার্থের পরিপন্থী না হয়।’
মিন অং হ্লাইংয়ের ভাষ্যমতে, বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের মধ্যে যারা ‘গ্রহণযোগ্য’, ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব অনুযায়ী তাদেরই ফেরার অনুমতি দেওয়া হবে।
মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের নায়ক সিনিয়র জেনারেল হ্লাইংয়ের ভাষণের পুরো বক্তব্য প্রকাশ করেছে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম দ্য গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার। ভাষণের বেশিরভাগ জুড়েই সেনা অভ্যুত্থানের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন তিনি।
তার দাবি, মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেতা অং সান সু চি সম্প্রতি যে নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন, তা মোটেও নিরপেক্ষ ছিল না। গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখতে ব্যর্থ হয়েছে নির্বাচন কমিশনও।
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে দ্রুত ফের নির্বাচনের মাধ্যমে জয়ীদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, দেশটিতে ২০১১ সাল পর্যন্ত ৪৯ বছরব্যাপী যে সেনাশাসন ছিল, তা থেকে এবারের জান্তা সরকারের অধীনে সব কিছু ভিন্ন হবে।
এসময় মিয়ানমারে ‘সত্যিকারে সুশৃঙ্খল গণতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠারও প্রতিশ্রুতি দেন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা হ্লাইং।