প্রবাসীর স্ত্রী তাহমিনার দায় কেউ নিতে রাজি নয়, শেষ পর্যন্ত পুলিশী হেফাজতে

5253

স্টাফ রিপোর্টার :
শহরতলীতে পরকীয়ার টানে স্বামীর ঘরছাড়া প্রবাসীর স্ত্রী পড়েছেন বিপাকে। তাকে আশ্রয় দিচ্ছেন না বাবা কিংবা স্বামীর বাড়ির কেউ। আশ্রয় দিচ্ছে না পরকীয়া প্রেমিকও। ফলে তিনকুলই হারালেন ওই গৃহবধূ।
গত ৯ জানুয়ারি ২ সন্তানকে রেখে পালিয়ে গিয়েছিলেন তাহমিনা নামের ওই গৃহবধূ। তবে যাননি পিত্রালয়েও। তাহমিনা পরকীয়ার টানে সন্তানদের ফেলে স্বামীর ঘর ছেড়ে চলে যান সরাসরি প্রেমিকের বাড়িতে। ঘরছাড়া তাহমিনা বেগম এসএমপি জালালাবাদ থানার কেমিদপুর (ভুলতা) গ্রামের প্রবাসী কবির মিয়ার স্ত্রী ছিলেন। তিনি সুনামগঞ্জ জেলার রায় সন্তুষপুর গ্রামের মৃত আক্তার আলীর কন্যা।
এদিকে, তাহমিনা চলে যাওয়ার পরদিন ১০ জানুয়ারি মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন প্রবাসী কবির মিয়ার মা (তাহমিনার শাশুড়ি) ছফিনা বেগম।
সাধারণ ডায়েরিতে অভিযোগ করা হয়, তাহমিনা বেগম পালানোর সময় স্বামীর ঘর থেকে নগদ ৫ লাখ টাকা ও ১৫ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে চলে যান।
স্থানীয়রা জানান, তাহমিনার স্বামী কবির আহমদ সৌদি আরবে বসবাস করেন। একই জায়গায় বসবাস করেন টুকেরবাজারের ভবতীপুর গ্রামের বাসিন্দা নুরু মিয়া। ওই নুরুর সঙ্গে ইমো ও হোয়াটসআপের মাধ্যমে সম্পর্ক তাহমিনার। সাম্প্রতিক সময়ে নুরু সৌদি আরব থেকে দেশে এসেছেন। এরপর তাদের মধ্যে দেখা সাক্ষাৎ হয়। গত ৯ জানুয়ারি রাতে নুরুর সঙ্গেই পালান তাহমিনা। বিষয়টি জানতে পেরে তাহমিনার স্বামী কবির মিয়ার ডাকযোগে তালাকনামা প্রেরণ করেন।
এদিকে, ঘটনার ২৪ দিন পর গত সোমবার ১ জানুয়ারী দিবাগত রাতে স্ত্রীর অধিকার নিয়ে স্বামীর বাড়িতে আসেন তাহমিনা। তবে তাকে আশ্রয় দিতে রাজিন হননি শ্বশুরবাড়ির কেউ। শ্বশুড়বাড়ির লোকজন পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে এবং তাহমিনাকে বাবার বাড়ি পাঠাতে চায়। কিন্তু তাহমিনার বাবার বাড়ির কেউও তাকে আশ্রয় দিতে রাজি হননি। পরবর্তীতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শে তাহমিনাকে পুলিশ হেফাজতে রাখেন এসএমপির জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা খান।
তিনি এ বিষয়ে বলেন, ওই গৃহবধূর কবির মিয়ার সঙ্গেও প্রেমের সম্পর্কের বিয়ে ছিলো। পরবর্তীতে কবিরের ঘরে থাকাবস্থায় নুরু নামের আরেক প্রবাসীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং এরই জের ধরে তাহমিনা গত মাসে স্বামীর ঘর ছেড়ে নুরুর বাড়িতে উঠেন। কিন্তু গত সোমবার আবারও সে ফিরে আসে কবিরের বাড়িতে। কিন্তু ইতোমধ্যে কবির তাহমিনাকে তালাক দিয়ে দিয়েছেন।
ওসি বলেন, আগের বিয়েটাও প্রেমের সম্পর্কে হওয়ায় তাহমিনার বাবার বাড়ির লোকজন তার উপর অসন্তুষ্ট ছিলেন। তাই তারাও এখন আর তাহমিনার দায় নিতে চাচ্ছেন না। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাহমিনাকে পুলিশি হেফাজতে রেখে গতকাল মঙ্গলবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এখন বিজ্ঞ আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবেন তাই হবে।