কাজিরবাজার ডেস্ক :
বাংলাদেশ পুলিশের ব্যাপারে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের আহ্বান জানিয়ে ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘সাংবাদিকদের কাছে আমরা গঠনমূলক সমালোচনা চাই, ক্রিয়েটিভ রিপোর্ট চাই না, বস্তুনিষ্ঠ ফ্যাক্টনির্ভর রিপোর্ট চাই। রিপোর্টে আমরা কোনো সাহিত্য রচনা প্রত্যাশা করি না।’
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) বার্ষিক সাধারণ সভা-২০২০ এ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আইজিপি এসব কথা বলেন।
ক্র্যাব সভাপতি আবুল খায়েরের সভাপতিত্বে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ক্র্যাব চত্বরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন র্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বিকু। সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্য এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের ‘ওপেনিয়ন বিল্ডার’ আখ্যায়িত করে আইজিপি বলেন, ‘সাংবাদিকদের ওপর সমাজের গতি প্রকৃতি নির্ভর করে। সাংবাদিকদের একটি রিপোর্ট মুহূর্তের মধ্যে মানুষের মনে গভীরভাবে রেখাপাত করতে পারে। সেজন্য আপনাদের কলমের ক্ষমতা মাথায় রাখতে হবে।’
আইজিপি বলেন, ‘সাংবাদিক এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য অর্থাৎ ল এনফোর্সমেন্ট প্র্যাকটিশনাররা একই প্ল্যাটফর্মে কাজ করে। আপনারা আমাদের গঠনমূলক সমালোচনা করবেন।’
পুলিশপ্রধান বলেন, ‘গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থাকে সুসংহত করার জন্য বিগত দিনে যে আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছে সেখানে রাজনীতিবিদ ও দেশের আপামর জনগণের সঙ্গে সাংবাদিকরাও সমানতালে কাজ করেছেন। আমাদের স্বাধীনতা পূর্ব এবং স্বাধীনতা উত্তরকালে সাংবাদিকরা তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা এবং গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।’
বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘রূপকল্প- ২০৪১’ বাস্তবায়নের আর ২১ বছর বাকি রয়েছে। আমরা ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হবো। উন্নত দেশের উপযোগী পুলিশ গড়তে আমরা কাজ শুরু করেছি। আমরা পুলিশকে দুর্নীতিমুক্ত, মাদকমুক্ত করতে চাই। ‘পুলিশ ব্রুটালিটি’ নিয়ে আমরা সংবাদপত্রে খবর হতে চাই না।’
আইজিপি বলেন, ‘আমরা ভালো কাজে আপনাদের উৎসাহ চাই, সহযোগিতা চাই। কোনো পুলিশ সদস্য খারাপ কাজ করলে বস্তুনিষ্ঠ ফ্যাক্ট তুলে ধরুন। ওই সদস্যকে আমরা কোনো ছাড় দেব না।’
আগামীতে দেশের প্রয়োজনে, রাষ্ট্রের প্রয়োজনে, গণমানুষের প্রয়োজনে, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সুবর্ণ সময় রেখে যাওয়ার লক্ষ্যে পুলিশ এবং সাংবাদিক হাতে হাত ধরে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন আইজিপি।
পুলিশপ্রধান বলেন, ‘গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় ভিন্ন মত ও পথ থাকবে। কিন্তু জাতীয় অর্জন, রাষ্ট্র ও সমাজের ক্ষেত্রে ১৬ কোটি মানুষের ৩২ কোটি হাত একসাথে থাকতে হবে।’
র্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘পুলিশ এবং সাংবাদিকতা উভয় পেশাই ঝুঁকিপূর্ণ। সাংবাদিকরা ঝুঁকি নিয়ে করোনাকালে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে তথ্য দিয়ে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে কাজ করেছেন।’ তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকদের সাথে র্যাবের পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ পেশাগত সম্পর্ক আগামীতে আরও সুদৃঢ় হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে ক্র্যাব সভাপতি আবুল খায়ের বলেন, ‘পুলিশ মানবিকতার ঊর্ধ্বে উঠে করোনাকালে জনগণকে সেবা দিয়েছে। পুলিশের সাথে সাংবাদিকদের সৌহার্দ্যপূর্ণ পেশাগত সম্পর্ক রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।’
