কাজিরবাজার ডেস্ক :
এপারে বাংলাদেশের সিলেটের জকিগঞ্জ, ওপারে ভারতের আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জ। দুই দেশের এ সীমান্তে ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে এক সুড়ঙ্গের দেখা পেয়েছে আসাম পুলিশ। তাদের দাবি, চোরাচালান, অপরহণসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড চালাতেই এই সুড়ঙ্গ খনন করেছে দুষ্কৃতিকারীরা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম খবরে বলা হয়, গত রবিবার করিমগঞ্জের নিলামবাজার থানার শিলুয়া গ্রামের বাসিন্দা দিলোয়ার হোসেনকে তুলে নিয়ে যায় দুষ্কৃতিকারীরা। পরে তার বাড়িতে ফোন করে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয়। যে ফোন নম্বর থেকে কল করা হয়েছিল সেটি বাংলাদেশের ফোন নম্বর দেখে চিন্তা বেড়ে যায় দিলোয়ারের পরিবারের সদস্যদের। এরপর দিলোয়ারের পরিবারের লোকজন স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতার জন্য যান। পুলিশের পরামর্শে মুক্তিপণ কমানোর জন্য দর কষাকষি শুরু হয়। কিন্তু অপহরণকারীরা অনড় থাকায় পাঁচ লাখ টাকা দিতেই সম্মত হয় দিলোয়ারের পরিবার। এরপর অপহরণকারীরা জানায়, কাউকে না-জানিয়ে টাকা দিতে হবে দিলোয়ারদের পার্শ্ববর্তী নয়াগ্রামের এলিমুদ্দিনের কাছে। ফলে সূত্র পেয়ে যায় পুলিশ।
গত বুধবার এলিমুদ্দিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় শুরু হয় তল্লাশি। এতে সুড়ঙ্গের বিষয়টি পুলিশ জেনে যেতে পারে আশঙ্কায় অপহরণকারীরা দিলোয়ারকে ছেড়ে দেয়। তবে তাতেও রক্ষা হয় নি, দিলোয়ার ফিরে এসেই পুলিশকে সুড়ঙ্গের কথা জানান। গত শুক্রবার পুলিশ অফিসাররা বালিয়া এলাকার সীমান্তে যান। স্থানীয় পুলিশ সুপার ময়ঙ্ককুমার ঝা’র নেতৃত্ব পরিচালিত অভিযানে ২০০ মিটার দীর্ঘ এক সুড়ঙ্গের সন্ধান পায় পুলিশ। সুড়ঙ্গটি দেখে কেউ কল্পনাও করতে পারবে না যে এখানে এমন একটি সুড়ঙ্গ রয়েছে। দেখে মনে হয়, সাধারণ একটি গর্ত।
অপহরণের শিকার হওয়া দিলোয়ার জানান, বাংলাদেশ প্রান্তেও সুড়ঙ্গটির একই রকম চেহারা। এ পথে দুষ্কৃতিকারীরা নিয়মিত যাতায়াত করে। চলে পাচার বাণিজ্যও।
ময়ঙ্ককুমার ঝা জানান, সুড়ঙ্গটির ভারতের প্রান্তের মুখ বন্ধ করতে বিএসএফকে বলা হয়েছে৷ তিনি বিএসএফ কমান্ডান্টের সঙ্গেও যোগাযোগ রেখে চলেছেন। আন্তর্জাতিক অপহরণকারী চক্রের এ ভারতের প্রান্তের সবাইকে শিগগিরই গ্রেফতার করা হবে। তিনি দাবি করেছেন, ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে৷