গোয়াইনঘাটে ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে বীর নিবাস ॥ ৪৬ জন অসহায় ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা পরিবার পাবে ঠিকানা

79

গোয়াইনঘাট থেকে সংবাদদাতা :
গোয়াইনঘাট উপজেলায় ৪৬ জন অসহায় ও অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সরকারিভাবে ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।
৪৬টি বীর নিবাসের মধ্যে রয়েছে উপজেলার ১ নং রুস্তুমপুর ইউনিয়নে ৭ টি, ২নং পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নে ৭টি, ৩নং পূর্ব জাফলং ইউনিয়নে ১৪টি, ৪নং লেঙ্গুড়া ইউনিয়নে ৫টি, ৫নং পূর্ব আলীরগাঁও ইউনিয়নে ১টি, ৬নং ফতেহপুর ইউনিয়নে ১টি, ৭নং নন্দীরগাঁও ইউনিয়নে ৩ টি, ৮ নং তোয়াকুল ইউনিয়নে ৪টি, ৯ নং ডৌবাড়ী ইউনিয়নে ২টি এবং ১০নং পশ্চিম আলীরগাঁও ইউনিয়নে ১টি।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজমুস সাকিব জানান, বীর নিবাস গুলোর প্রতিটি বাড়ির রং হবে জাতীয় পতাকার রং লাল-সবুজের সমন্বয়ে। বাড়ির আয়তনও হবে একই সমান। দুটি বেড রুম, বারান্দাসহ একতলা বিশিষ্ট প্রতিটি বাড়িতে থাকবে আলাদা বাথরুম, টিউবওয়েল এবং গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি পালনের জন্য পৃথক সেড। ভূমিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের নিজস্ব জমিতে এই বাড়ি নির্মাণ করছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও এলজিইডি মন্ত্রণালয়। তিনি আরো জানান, উপজেলায় ভূমিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় এই বাড়িগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে।
এই আবাসন বরাদ্দের জন্য অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ-প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধার বিধবা স্ত্রী ও সন্তান আবেদন করেন। বীরাঙ্গনাদের ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরাসরি বরাদ্দ দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোনো যাচাই-বাছাই ছাড়াই আবেদনটি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় যাচাই-বাছাই শেষে সরাসরি তাদের বিপরীতে আবাসন বরাদ্দ দেবে। সুবিধাভোগী নির্বাচনের জন্য উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতি ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব মনোনীত করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
‘বরাদ্দপ্রাপ্ত আবাসনের ব্যবহারে’ শীর্ষক কলামে উল্লেখ করা হয়েছে বরাদ্দপ্রাপ্ত সুবিধাভোগীকে বরাদ্দপ্রাপ্ত বাড়িটি শুধু নিজের বাড়ি হিসেবে ব্যবহার করবেন মর্মে চুক্তিপর্বে অঙ্গীকার করতে হবে। এই বাড়িটি কোনোভাবেই বিক্রি বা অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না। নির্মিত বাড়িটির মূল অবকাঠামোগত কোনো পরিবর্তন পরিবর্ধন বা ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করা যাবে না। বাড়িটি সংস্কার মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যয় বরাদ্দপ্রাপ্ত সুবিধাভোগী নিজ খরচে বহন করবেন।গোয়াইনঘাট উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যে বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে তার নাম ঠিক করা হয়েছে ‘বীর নিবাস’। এই প্রকল্পের আওতায় গোয়াইনঘাট উপজেলায় নির্মাণ করা হবে ৪৬টি বাড়ি।
প্রতিটি বাড়ি হবে ৯৮০ বর্গ ফুটের। চার ডেসিমাল জমিতে ৯০০ বর্গফুট আয়তনের এক একটি ভবনের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে আবেদনপত্র আহ্বান করে অসহায় এবং আর্থিকভাবে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন সুবিধা নিশ্চিতকরণে গোয়াইনঘাট উপজেলায় শতকরা ৬ ভাগ তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।