স্টাফ রিপোর্টার :
ওসমানীনগরে বন্দুক দিয়ে গুলি করা ও চাঁদা না দেওয়ার দায়েরকৃত মামলায় ৭ জনকে জেল জরিমানা দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার বিকেলে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক মো: ইব্রাহিম মিয়া এ রায় প্রদান করেন। ঘোষিত রায়ে ৩ জনকে ২ বছর করে কারাদন্ড ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও ৪ জনকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। দন্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছে- ওসমানীনগর থানার হামতনপুর গ্রামের একলাছ মিয়ার পুত্র বদরুল মিয়া (৩০), একই এলাকার মৃত সুরুজ মিয়ার পুত্র তোফায়েল মিয়া (২০) ও বদরুল মিয়ার ভাই নজরুল মিয়া (২৭) এবং জরিমানাকৃত আসামীরা হচ্ছেন-ওসমানীনগর থানার হামতনপুর গ্রামের রাজ্জাক মিয়ার পুত্র তুহিন মিয়া (২০), একই এলাকার মৃত গুলু মিয়ার পুত্র শিপন মিয়া (২৪), মৃত আয়না মিয়ার পুত্র আব্দুল মুমিন (২২) ও আব্দুল বারীর পুত্র শিবলু মিয়া (৩৫)। রায় ঘোষণার সময় সকল দন্ডপ্রাপ্ত ও জরিমানাকৃত আসামীরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলো।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে ,ওসমানীনগর থানার হামতনপুর গ্রামের আব্দুল রুপের স্ত্রী সাজনা বেগম বাড়ীর বাউন্ডারী দেওয়াল নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। বিষয়টি জানতে পেরে আসামীরা সাজনা বেগমের কাছে ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। এতে সাজনা বেগম চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। গত ২০১৪ সালের ৫ এপ্রিল রাত ৩ টার দিকে আসামী বদরুল, তোফায়েল, নজরুল, তুহিন, শিপন, আব্দুল মোমিন ও শিবলুরা বন্দুক, পিস্তল, রামদা ছুরি, শাবল ও লোহার রড ইত্যাদিসহ অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সাজনা বেগমের বাড়ীতে হামলা চালিয়ে তার বোন পুতকে বুকে, চোখে গুলি করে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায় আসামীরা। এ ঘটনায় সাজনা বেগম ৯ জনকে আসামী করে ওসমানীনগর থানায় চাঁদা ও বন্দুক দিয়ে গুলি করার অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং -২(৬/৪/২০১৪)। দীর্ঘ তদন্ত শেষে একই বছরের ২২ জুন ওসমানীনগন থানার এস আই সাইফুল আলম ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে একটি চার্জশিট (নং-৭৫) দাখিল করেন এবং ২০১৫ সালের ১৭ মে থেকে ঐ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে এ মামলার বিচার কার্য শুরু করেন আদালত। দীর্ঘ শুনানী ও ১০ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে গতকাল মঙ্গলবার ২৪ নভেম্বর আদালত আসামী বদরুল মিয়া, তোফায়েল মিয়া ও নজরুল মিয়াকে ৩২৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদেরর প্রত্যেককে ২ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং আসামী তুহিন মিয়া, শিপন মিয়া, আব্দুল মোমিন ও শিবলু মিয়াকে ৪৪৭ ও ৩২৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদের প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ৭ দিনের সশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া আসামী লটু মিয়া (৪৮) মামলা চলাকালীন সময়ে তিনি মারা যান এবং আসামী লটু মিয়ার পুত্র জুবায়ের (২২) এর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে এডিশনাল পিপি এডভোকেট জসিম উদ্দিন আহমদ এবং আসামীপক্ষে এডভোকেট মনির উদ্দিন আহমদ মামলাটি পরিচালনা করেন।