সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
হাওরাঞ্চলে হচ্ছে স্বপ্নের উড়াল সড়ক। সুনামগঞ্জ-নেত্রকোণা মহাসড়কের মান্নানঘাট থেকে গুল্লা গ্রাম হয়ে ধর্মপাশার মধুপুর পর্যন্ত গভীর হাওরে উড়াল সেতুসহ রাস্তা এবং দিরাই-শাল্লা সড়ক নির্মাণ করা হবে। প্রায় সাড়ে ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এই সড়কের সবকিছুই হবে দৃষ্টিনন্দন ও চোখ ধাঁধানো।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সহজেই দেশ-বিদেশের পর্যটকরা সুনামগঞ্জে প্রবেশ করে হাওরের উড়াল সড়ক দিয়ে নেত্রকোণা হয়ে ঢাকায় চলে যেতে পারবে। ফলে হাওর কেন্দ্রিক ব্যবসা ও পর্যটনের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। সুনামগঞ্জ হবে দেশ বিদেশের পর্যটকদের জন্য দৃষ্টিনন্দন ও মনোমুগ্ধকর স্পট। দেশ-বিদেশ থেকে হাজারো পর্যটক ও প্রকৃতিপ্রেমিরা ছুটে আসবেন এখানে এবং হাওর-পাড়ের মানুষের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা খরচ হবে এবং প্রকল্পের সম্ভাব্য মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৫ সাল পর্যন্ত। প্রকল্পটি চলতি মাসেই একনেকের সভায় অনুমোদনের জন্য তোলা হবে বলে জানা গেছে। এর সম্ভব্য নাম ‘শেখ হাসিনা উড়াল সড়ক’ নির্ধারণ করা হয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, উড়াল সড়ক ছাড়াও হাওর এলাকাজুড়ে আরও ১০৭ কিলোমিটার নান্দনিক সড়ক নির্মাণ করা হবে। থাকবে ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুবন্ত সড়কও। পানি-সহনীয় সড়কটি বর্ষায় ডুবে থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে যানবাহন চলাচল করতে পারবে। এছাড়াও হবে উপজেলা সাবমারসিবল, অল সিজন ইউনিয়ন সড়ক। উপজেলা সড়কে ২ হাজার ৯৮৭ মিটার ও ইউনিয়ন সড়কে ৬৮৫ মিটার সেতু নির্মাণ করা হবে। বিভিন্ন সড়কে থাকবে ৭৭৫ মিটার কালভার্ট। এর মাধ্যমে সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ ও দিরাই উপজেলা উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার অধীনে আসবে।
এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুর রশীদ খান জানান, সুনামগঞ্জ বাংলাদেশের অন্যসব স্থানের মতো নয়। হাওরের কারণে এই জেলার অধিকাংশ উপজেলা সড়ক যোগাযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন। তাই এসব উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণে অনেকগুলো প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এসব বাস্তবায়িত হলে হাওরবাসী আর পিছিয়ে থাকবে না।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে হাওর অঞ্চল ব্যবসা ও পর্যটনের জন্য পুরোপুরি খুলে দেয়া হবে।
পর্যটকদের সুযোগ সুবিধা প্রসঙ্গে মন্ত্রী আরও বলেন, সরকারিভাবে উড়াল সড়কের দুই পাশে কিছু দূর দূর ‘ইয়ূথ হোস্টেল’ করে দেব। গড়ে তোলা হবে টিনসেডের বাংলো টাইপের হোস্টেল যা হাওরে দেখতেও সুন্দর লাগবে। পরিষ্কার পানি ও রান্নাবান্নার ব্যবস্থা থাকবে। সর্বোপরি এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে সারা দেশ হাওরাঞ্চল সুনামগঞ্জে প্রবেশের সুযোগ পাবে পাশাপাশি উন্মোচিত হবে ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটনের নতুন দুয়ার।