দেশের বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু হওয়ায় একের পর এক বিচাবর্হিভূত হত্যাকান্ড ঘটছে। যার সর্বশেষ উদহারণ লালমনিরহাটে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে নিরীহ মানুষকে গণপিটুনির মাধ্যমে হত্যা ও লাশ পুড়িয়ে ফেলা। এমন নৃশংস ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও এর উস্কানিদাতাদের বিচারের আওতায় আনতে না পারলে দেশে আরও এমন ঘটনা ঘটতে থাকবে। সাধারণ মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে উঠবে।
লালমনিরহাটে গণপিটুনি ও পুড়িয়ে মানুষ হত্যার প্রতিবাদে সোমবার বিকেলে সিলেটে ‘নাগরিকবন্ধন’ কর্মসূচিতে বক্তারা এসব কথা বলেন। ধর্ষণ, পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুসহ সাম্প্রতিক নানা অনিয়মের প্রতিবাদে গড়ে ওঠা নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ‘দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’ এই প্রতিবাদী কর্মসূচির আয়োজন করে।
এতে অংশ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, ধর্মের নামে কোনো ধরণের সন্ত্রাসী কার্যক্রম চলতে পারে না। কেউ ধর্ম অবমাননা করলে তার জন্য প্রচলিত আইন আছে। আইন অনুযায়ী তার বিচার হবে। কিন্তু ইদানীংকালে আমরা দেখতে পাচ্ছি, যে কারো বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে পিটিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। লালমনিরহাটে গণপিটুনিতে হত্যার পর কুমিল্লায় একই অভিযোগে বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই সব সন্ত্রাসী কার্যক্রম সরকারকেই বন্ধ করতে হবে। আইনের শাসন নিশ্চিতে সরকারকে সচেষ্ট হতে হবে।
বক্তারা বলেন, সারাদেশেই একটি ভয়ের সংস্কৃতি চালু করা হয়েছে। মানুষজন এখন কথা বলতেও ভয় পায়। কে কখন আক্রান্ত হবে সেই ভয়ে আছে সবাই। এমন গুমোট পরিস্থিতি থেকে মানুষ নিস্তার চায়। এজন্য সবাইকে সহনশীল আচরণ করতে হবে। উস্কানি ও গুজবে কান দিয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া চলবে না।
শাহজালাল বিশ^ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. নাজিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও দেবাশীষ দেবুর সঞ্চালনায় ‘নাগকিরবন্ধন’ চলাকালীন সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’র সংগঠক আব্দুল করিম কীম।
এতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ওয়ার্কার্স পার্টি সিলেটের সভাপতি সিকন্দর আলী, সিপিবি সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সুমন, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সভাপতি মিশফাক আহমদ মিশু, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষকের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় ধর ভোলা, উদীচী সিলেটের সভাপতি এনায়েত হোসেন মানিক, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সাধারণ সম্পাদক রজতকান্তি গুপ্ত, ইমজা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক সজল ছত্রী, বাসদ পাঠচক্র ফোরামের সংগঠক সুশান্ত কুমার সিনহা, কবি আবিদ ফায়সাল, কবি প্রণবকান্তি দেব, নারী নেত্রী ইন্দ্রানী সেন শম্পা, পরিবেশকর্মী আব্দুল হাই আল হাদী, ছাত্র ইউনিয়ন সিলেটের সভাপতি সরোজকান্তি, ছাত্রফ্রন্ট সিলেটের সভাপতি সঞ্জয় দাস, দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’র সংগঠক আশরাফুল কবির, সত্যজিত চক্রবর্তী, রাজীব রাসেল, মাহবুব রাসেল, নিরঞ্জন সরকার অপু, হিতাংশু কর বাবু প্রমুখ।
এতে আরও উপস্থিত ছিলেন গণসঙ্গীত শিল্পী অংশুমান দত্ত অঞ্জন, রতন দেব, ছাত্র ইউনিয়ন সিলেটের সাবেক সভাপতি নাবিল এইচ, ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কসবাদী) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক ডা. হরিধন দাস, সংস্কৃতি কর্মী কার্তিক পাল, আশরাফুল ইসলাম অনি প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি