কাজিরবাজার ডেস্ক :
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০০০’ র খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রী সভা। আজ মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ জারি করা হবে। অধ্যাদেশ জারির সঙ্গে সঙ্গে অর্থাৎ আজ থেকেই ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধানটি কার্যকর হবে। সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল মন্ত্রীসভা বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন। সচিবালয় থেকে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা যুক্ত ছিলেন।
পরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, মঙ্গলবার সংশোধিত আইনের অধ্যাদেশ জারি হলে এই অপরাধ কমে আসবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। সংশোধিত আইন মন্ত্রীসভা বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সংশোধিত আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবনও থাকছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, নারী ও শিশু ধর্ষণ জঘন্যতম অপরাধ। আশা করি, এ আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে ধর্ষণমুক্ত হবে দেশ। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী, এখন ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড । দেশজুড়ে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন বিরোধী আন্দোলন এবং ধর্ষণকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার দাবির মধ্যে সরকার এই পদক্ষেপ নিল।
সচিবালয়ে মন্ত্রী সভা বৈঠকের বিষয়ে ব্রিফিং করেন মন্ত্রী পরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত কিছুদিনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে নারী ও শিশু নির্যাতনমূলক অপরাধগুলো কঠোরভাবে দমনের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (১) উপধারা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এই উপধারায় বিধান ছিল- যদি কোন পুরুষ কোন নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তা হলে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হবেন এবং এর অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হবেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব আসে নারী বা শিশু ধর্ষণ একটি জঘন্য অপরাধ, সমাজে নারী বা শিশু নির্যাতন কঠোরভাবে দমনের লক্ষ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (১) উপধারার অধীন ধর্ষণের অপরাধের জন্য মৃত্যুদ- অথবা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড প্রদানের লক্ষ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ সংশোধন করা প্রয়োজন।
মন্ত্রী পরিষদ সচিব বলেন, যেহেতু বর্তমানে সংসদের অধিবেশন নেই এবং আশু ব্যবস্থা গ্রহণ খুবই জরুরী হয়ে পড়েছে সে জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে যদি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় তাহলে তিনি সংবিধানের ৯৩ (১) প্রদত্ত ক্ষমতাবলে অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করতে পারবেন। যেহেতু সংসদ কার্যকর নেই সেজন্য এটা অধ্যাদেশের মাধ্যমে জারি করা হবে। লেজিসলেটিভ বিভাগের ভেটিংয়ের প্রেক্ষিতে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সংশোধিত আইন অনুযায়ী ৯ (১) উপধারায় ‘যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড’ শব্দগুলোর পরিবর্তে ‘মৃত্যুদন্ড’ বা ‘যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড’ শব্দগুলো প্রতিস্থাপিত হবে বলেও জানান মন্ত্রীপরিষদ সচিব।
২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১ (গ), ২০ (৭) উপধারা সংশোধন করতে হবে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ধর্ষণ ছাড়া সাধারণ জখম হলে আপোস করা যাবে। আগের আইনে ১৯৭৪ সালের শিশু আইনের রেফারেন্স ছিল। ২০০৩ সালে শিশু আইন প্রচলন করা হয়। এ বিষয়টি সংশোধন করা হচ্ছে। ধর্ষণের সংজ্ঞার পরিবর্তনের বিষয়ে মন্ত্রী সভা বৈঠকে কোন কথা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডেফিনেশনের বিষয়ে কোন আলোচনা হয়নি। ধর্ষণ মামলার বিচার কতদিনের মধ্যে শেষ হবে- এ বিষয়ে মন্ত্রীপরিষদ সচিব বলেন, আগের আইনের ২০(৩) ধারায় এটা আছে, ১৮০ দিনের মধ্যে হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচার হবে। এখানে বিচার পদ্ধতি উল্লেখ করা আছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী পরিষদ সচিব বলেন, শুধু আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে না। অনেক দেশের আইন চেক করে দেখেছে আমাদের আইন মন্ত্রণালয় ও মহিলাবিষয়ক মন্ত্রণালয়। আর বর্তমান পরিস্থিতি ও বাস্তবতা সবকিছু মিলেই এটা হয়েছে। শুধু আন্দোলনের জন্য তো জিনিসটা আসেনি। সরকারের মধ্য থেকেও এটার পক্ষে একটা প্রচার আছে। জনসচেতনতার কারণে হয়ত এটা আসছে, সেটা হতে পারে।
আগে যাবজ্জীবন ছিল, সেই শাস্তিও দেয়া যায়নি, এখন সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড করে লাভটা কোথায় হবে- এ বিষয়ে মন্ত্রীপরিষদ সচিব বলেন, যেভাবে প্রমোশন ক্যাম্পেন হচ্ছে, এটাও তো একটা প্রমোশনের জায়গা। এটা অবশ্যই সাধারণ মানুষের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। যারা ক্রাইম করে তারা অন্তত দুবার চিন্তা করবে যে, এটাতে তো মৃত্যুদন্ড আছে। এখন তো আর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড নয়। ১৮০ দিন তো দীর্ঘ সময়ও নয়। অবশ্যই এটা ইতিবাচক হবে।
এই আইনে বলা হয়েছে ‘আরোপিত অর্থদণ্ডকে, প্রয়োজনবোধে, ট্রাইব্যুনাল অপরাধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে গণ্য করিতে পারিবে এবং অর্থদন্ড বা ক্ষতিপূরণের অর্থ দণ্ডিত ব্যক্তির নিকট হতে বা তার বিদ্যমান সম্পদ হতে আদায় করা সম্ভব না হলে, ভবিষ্যতে তিনি যে সম্পদের মালিক বা অধিকারী হবেন সেই সম্পদ হতে আদায়যোগ্য হবে এবং এই রূপ ক্ষেত্রে উক্ত সম্পদের ওপর অন্যান্য দাবি অপেক্ষা উক্ত অর্থদণ্ড বা ক্ষতিপূরণের দাবি প্রাধান্য পাবে।’
সম্প্রতি দেশের বিভিন্নস্থানে ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। এরমধ্যে গত ৪ অক্টোবর নোয়াখালীতে এক নারীকে (৩৭) বিবস্ত্র করে নির্যাতনের এক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। যদিও গত সেপ্টেম্বর মাসের শুরুর দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনা ভাইরাল হওয়ার পর দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। জড়িতদের অধিকাংশকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এছাড়া ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধেও রাজধানীসহ সারাদেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। আন্দোলনকারীরা ধর্ষণকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড করার দাবি জানিয়েছেন।
গত শুক্রবার বিকেলে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন বিরোধী মহাসমাবেশ থেকে সারাদেশে অব্যাহত ধর্ষণ ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে লংমার্চের ঘোষণা দেয়া হয়। ‘ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ ব্যানারে আয়োজিত মহাসমাবেশে দেয়া ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ১৬ ও ১৭ অক্টোবর নোয়াখালী অভিমুখে লংমার্চ করার কথা।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মন্ত্রীসভা বৈঠকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ এর ১ ধারা সংশোধন করে ধর্ষণের সাজা মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি যাবজ্জীবন রাখার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ সময় আইনের ১১ এর ‘গ’ ধারাও সংশোধন প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর ফলে ধর্ষণে সাধারণ জখমকে (সিম্পল হার্ট) আপোসযোগ্য করা হয়েছে, যা আগে আপোসযোগ্য ছিল না। সোমবার দুপুরে রাজধানী গুলশানের নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমি আপনাদেরকে বলেছিলাম যে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ এর ১ ধারায় ধর্ষণের জন্য যে সাজা আছে, সেই ছিল যাবজ্জীবন কারাদন্ড। এই আইনটা সংশোধন করে এখানে মৃত্যুদণ্ডের প্রস্তাব আজকে (সোমবার) মন্ত্রীসভায় উত্থাপন করা হয়। সেই মোতাবেক আজকে (সোমবার) ৯ এর ১ ধারায় ধর্ষণের সাজা যাবজ্জীবনের পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমি একটি সংশোধন উত্থাপন করি। সেটা হচ্ছে, ধর্ষণের শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। যেহেতু ৯ এর ১ ধারা সংশোধন করা হচ্ছে, এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৯ এর ৪ ধারায়ও ঠিক সেই পরিবর্তন আনা হয়েছে, সংশোধন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন, কিছুদিন আগে হাইকোর্ট বিভাগের একটি দ্বৈত বেঞ্চ নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১১ এর ‘গ’ তে সাধারণ জখম ছিল, সেটা আপোসযোগ্য ছিল না। সেটাকে আপোসযোগ্য করার জন্য একটা নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার এ বিষয়েও বৃহস্পতিবার কথা হয়। সেই ধারাটিতেও ১১ সাধারণ জখমকে (সিম্পল হার্ট) আপোসযোগ্য করা হয়েছে। এর সংশোধনী আমরা মন্ত্রীসভায় উত্থাপন করেছিলাম।
শিশু আইন, ১৯৭৪ কে নতুন করে এ সরকার ২০১৩ সালে আরেকটা শিশু আইন পাস করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী। আনিসুল হক বলেন, সেখানেও আমরা সংশোধনী এনেছি। এ সকল সংশোধনে মন্ত্রী সভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে এটাকে অনুমোদন করা হয়েছে। অনুমোদন করা হয়েছে এই বলে যে, এই সংশোধনীগুলোকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে ভেটিং সাপেক্ষে এবং প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন যে, যেহেতু সংসদ এখন সেশনে নেই সেজন্য এটাকে অধ্যাদেশ করার জন্য আমরা আজ রাষ্ট্রপতির আদেশ বলে এটাকে অধ্যাদেশ হিসেবে জারি করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে সারাদেশে ঘটে যাওয়া ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনায় দেশব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করেন সাধারণ মানুষ। এসব কর্মসূচী থেকে সংশ্লিষ্ট আইনের পরিবর্তন এনে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার আহ্বান জানানো হয়।
আইনমন্ত্রী বলেছেন, আমরা নিশ্চয় বিশ্বাস করি যে, ধর্ষণের সাজা যাবজ্জীবন থেকে মৃত্যুদ- করায় এই অপরাধটি কমে আসবে। না হলে (সাজা) বাড়ানোর প্রশ্নটায় আসতাম না। তিনি বলেন, সাজা বাড়ানোর ব্যাপারটা পরিস্থিতির কারণে এবং আপনারা জানেন বিশ্বে মৃত্যুদ-ের ব্যাপারে অনেক বিতর্ক আছে। তারপরও আমাদের দেশে এই ঘৃণ্য অপরাধটির যে চিত্র আমরা দেখতে পাচ্ছি, সে কারণে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দিয়েছেন যে, এটা বাড়ানো উচিত। সেই প্রেক্ষিতে মৃত্যুদন্ডের ব্যাপারটা সংশোধনীতে এনেছি।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেছেন, নারী ও শিশু ধর্ষণ জঘন্যতম অপরাধ। এ অপরাধ কঠোরভাবে দমন করতে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে সংশোধিত ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০’ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রীসভা। আশা করি, এ আইনের বাস্তবায়নের মাধ্যমে ধর্ষণমুক্ত হবে দেশ। প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে সংসদ অধিবেশন নেই, তাই আজ মঙ্গলবার এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করবেন। তবে সম্ভবত আগামী নবেম্বরে সংসদ অধিবেশন বসবে। তখন আমরা এটিকে আইনে পরিণত করার জন্য সংসদে বিল হিসেবে উপস্থাপন করব। আইনের প্রয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি প্রায়ই একটা কথা বলে থাকি- শুধুমাত্র আইন বা সরকার দিয়ে সবকিছু করা সম্ভব হয় না। সরকারের সঙ্গে সমাজের লিডারদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তাইলেই দেশ ধর্ষণমুক্ত হবে। তিনি বলেন, ধর্ষক, ধর্ষকই। তার অন্য কোন পরিচয় থাকতে পারে না। এখানে পরিবারেরও দায়িত্ব অনেক। ধর্ষক নিশ্চয় কোন না কোন মা-বাবার ছেলে। আমাদের সামাজিকভাবে ধর্ষকদের বয়কট করতে হবে।