চাকরিতে জিরো টলারেন্স নীতি

16

অবশেষে সরকারী চাকরিতে প্রবেশের শর্ত হিসেবে ডোপ টেস্ট তথা মাদকাসক্তি পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। বেসরকারী নিয়োগসহ চাকরির ক্ষেত্রেও অনুরূপ ব্যবস্থা করা হবে পর্যায়ক্রমে। বিষয়টি ২০১৮ সালে প্রণীত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পাস হলেও এতদিন বাস্তবায়ন হতে পারেনি যথাযথ আইন ও বিধিমালা এবং আনুষ্ঠানিক পরীক্ষাগার বা ল্যাবের অভাবে। সম্প্রতি পুলিশের শতাধিক ব্যক্তি মাদকাসক্ত হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় সামনে চলে এসেছে বিষয়টি। এর জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছে ২১টি জেলা, যেখানে ডোপ টেস্টের জন্য নির্মাণ করা হবে আধুনিক ল্যাবরেটরি, যেগুলো পরিচালিত হবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অধীনে। এর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১০২ কোটি টাকা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটি অনুমোদন করলেই কাজ শুরু হবে। নিয়োগের জন্য বাছাইকৃত ব্যক্তির পুলিশ ভ্যারিফিকেশন, স্বাস্থ্য পরীক্ষার সঙ্গে করা হবে ডোপ টেস্ট। এসব ল্যাবে বিভিন্ন ধরনের মাদকাসক্তির পরীক্ষা নেয়া যাবে নির্ধারিত ফির বিনিময়ে, যা বহন করতে হবে চাকরিপ্রার্থীকে। ডোপ টেস্ট পজিটিভ হলে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীও অযোগ্য ঘোষিত হবেন। আবার কর্মরতদের মধ্যেও এর আলামত পাওয়া গেলে নেয়া হবে আইনানুগ ব্যবস্থা। আগামী বছরের শুরুতে বিসিএস ক্যাডার, পুলিশসহ বিভিন্ন বিভাগে দুই লক্ষাধিক নিয়োগ দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বর্তমানে মাদক ব্যবহারের প্রাবল্যে ডোপ টেস্টের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
বর্তমান সরকার জঙ্গিবাদ ও মাদক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে অনেক আগেই। এর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাবতীয় দুর্নীতি, অপকর্ম ও অপরাধের ক্ষেত্রেও ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি প্রয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন। দুর্নীতি দমনে দুর্নীতি দমন কমিশনও যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। এতে শতভাগ সাফল্য এসেছে, এমন বলা যাবে না। তবে রাঘববোয়ালদের ধরা পড়তে দেখা যাচ্ছে। দেশে জঙ্গীবাদ নির্মূল না হলেও অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে। তবে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিসহ ক্রসফায়ারে তিন শতাধিক মাদক কারবারি ও চোরাচালানি নিহত হলেও মাদক, বিশেষ করে ইয়াবার প্রবেশ ঠেকানো যাচ্ছে না। এহেন অবস্থার অবসানকল্পে সরকারী চাকরিতে প্রবেশসহ চাকরিরতদের জন্য ডোপ টেস্ট বা মাদক পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করতে যাচ্ছে সরকার। যা বিবেকবানদের প্রত্যাশা।